অর্থের অভাবে চিকিৎসা নিতে পারছেন না মুক্তিযোদ্ধা আলী উসমান
সাজিদুল হক, ধর্মপাশা :
ধর্মপাশায় অর্থের অভাবে চিকিৎসা করতে না পারায় দিনদিন মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন বংশীকুন্ডা উত্তর ইউনিয়নের সাউদপাড়া গ্রামের একাত্তরের বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী উসমান (৭৮)। যিনি বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে জীবন বাজি রেখে একাত্তরের রণাঙ্গনের যিনি অসীম সাহসিকতার সাথে দেশমাতৃকার টানে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন।
আজ তিনি জীবনের শেষ প্রান্তে এসে অর্থের অভাবে নিজের শরীরের চিকিৎসা করাতে পারছেন না। আলী উসমান দীর্ঘদিন ধরে ফুসফুসের ক্যান্সার, হাপানিসহ নানান জটিল রোগে ভুগছেন। ঢাকা বক্ষব্যাধি হাসপাতালে ৬ মাস চিকিৎসা নিয়ে অর্থের অভাবে প্রায় বছর খানেক আগে বাড়ি ফিরে এসেছেন।
পারিবারিক জীবনে বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী উসমান কোনো বিয়েশাদী করেন নি। আকতার হোসেন নামের তার এক ভাতিজাকে দত্তক নিয়ে নিজের ছেলের মতো করে লালন পালন করেছেন। তঁার ভিটেবাড়িসহ সামান্য জমি থাকলেও সংসার চালানোর একমাত্র আয়ের উৎস মুক্তিযোদ্ধার ভাতার টাকা। তাঁর বাড়িতে বসবাস করার ঘরটি জরাজীর্ণ। এই জরাজীর্ণ ঘরে জীবনে শেষ প্রান্তে এসে বিনা চিকিৎসায় জীবনযাপন করছেন।
আলী উসমানের পালিত সন্তান আকতার হোসেন বলেন, ‘আমার বাবা দীর্ঘদিন ধরে ফুসফুসে ক্যান্সার, হাপানীসহ বিভিন্ন রোগে ভোগছেন। বর্তমানে শুধু ঔষধপত্রের জন্য প্রতিদিন হাজার টাকার উপরে খরচ হয়। যা যোগান দিতে গিয়ে আমাদের হিমশিম হচ্ছে। তাই চিকিৎসার অর্থ সরবরাহসহ একটি বাড়ি নির্মাণের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানাই।
অসুস্থ মুক্তিযোদ্ধা আলী উসমান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলাম। ৭৮ বছর বয়সে জীবনের শেষ প্রান্তে এসে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি।’
উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নূর হোসেন বলেন, আমার সহযোদ্ধা আলী উসমান দীর্ঘদিন ধরে বিনা চিকিৎসায় আছেন যা দুঃখজনক। তাঁর চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে প্রশাসনসহ সকলকে পাশে দাড়ানোর জন্য বিনীত আহ্বান জানাচ্ছি।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আবু তালেব বলেন, ‘ওই মুক্তিযুদ্ধার পক্ষ থেকে সাহায্যের আবেদন করা হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা প্রহণ করা হবে।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন রোকন বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। আপনাদের কাছে থেকে জানতে পারলাম। উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।