তাহিরপুরে সংঘর্ষে আহত ২০, আটক ৫
তাহিরপুর প্রতিনিধি :
সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের পল্লীতে আধিপত্য বিস্তার করাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় কিশোরীসহ ২০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে অন্তত ৫ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে গেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে আজ শনিবার (১৬ মে) সকালে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট (উত্তর) ইউনিয়নের ধরুন্দ গ্রামে। এই গ্রামের পরশ আলীর ছেলে মলাই মিয়া ও কাঞ্চনপুর গ্রামের আলী হোসেন কমান্ডারের লোকজনের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ধরুন্দ গ্রামের পরশ আলীর ছেলে মলাই মিয়ার সাথে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে পার্শ্ববর্তী কাঞ্চনপুর গ্রামের মৃত কডু মিয়ার ছেলে আলী হোসেন কমান্ডারের মধ্যে। এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার সকালে মলাই মিয়ার কলেজ পড়ুয়া ছোট ভাই সালমান বাদাঘাট বাজারে আসার সময় ধরুন্দ গ্রামের সামনের রাস্তায় আলী হোসেন কমান্ডারের ছেলে কামাল হোসেন সালমানের পথ রোধ করে তাকে মারধর করেন।
খবর পেয়ে মলাই মিয়ার আত্মীয়-স্বজনরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে গিয়ে সালমানকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন। পরে কামাল বাড়িতে গিয়ে এ ঘটনা জানালে আলী হোসেন কমান্ডারের নেতৃত্বে তার আত্মীয়-স্বজনসহ লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মলাই মিয়ার বাড়ির সামনে গেলে উভয়পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন এবং ঘন্টাব্যাপী ধরে চলে এ সংঘর্ষ।
সংঘর্ষের খবর পেয়ে তাহিরপুর থানার এসআই দীপঙ্কর বিশ্বাস, এসআই মনিতোষ পাল, এসআই জহুর লাল দত্ত, এসআই মিজানুররহমান ও বাদাঘাট পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই মাহমুদুল হাসানের নেতৃত্বে এবং এএসআই রাজু কুমার বিশ্বাস ও এএসআই নজরুল ইসলামের সহযোগিতায় ২০ জন পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ উভয়পক্ষের ৫ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। আটককৃতরা হলেন- আলী হোসেন কমান্ডার (৫৫), জামাল মিয়া (৫৫), কবির হোসেন (২৬), ফরিদ মিয়া (৩৮) ও আর একজন।
সংঘর্ষে আহতরা হলেন- মলাই মিয়ার পক্ষের জামাল মিয়া (৫৫), জহির মিয়া (৩৫), কবির হোসেন (২৬), মোশারফ মিয়া (৩৫), জসিম উদ্দিন (৩৫), ফরিদ মিয়া (৩৮), নাছির মিয়া (৩৫), আবু বক্কর (৪২), আলাল মিয়া (২৮), দুলাল মিয়া (৪০) এবং আলী হোসেন কমান্ডারের পক্ষের আলী হোসেন কমান্ডার (৫৫), তার ছেলে কামাল মিয়া (৩৫), মাজেদা বেগম (১৬), অহিনুর (২৫), আক্কাছ আলী (৩৫), আইনুল মিয়া (৩২) সহ আরো ৫/৬ জন।
এর মধ্যে কামাল মিয়া ও মাজেদা বেগম গুরুতর আহত হওয়ায় তাদেরকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। অন্যদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আদিকুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কোনো পক্ষই লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।