দশ গ্রামের মানুষের চলাচলের ভরসা বাঁশের সাঁকো!
আব্দুল্লাহ আল মামুন :
প্রতিবার ব্রীজ নির্মাণ করে দিবে বলে জনপ্রতিনিধিরা প্রতিশ্রুতি দিলেও আশ্বাস ছাড়া কিছুই মিলেনি শনির হাওর পারের রাধানগরসহ ১০ গ্রামের মানুষের ভাগ্যে। বছরের পর বছর বাশের সাকো মানুষের চলাচলের একমাত্র পথ। জরাজীর্ণ সাঁকো দিয়ে চলাচল করে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন অনেকেই।
জানা যায়, জামালগঞ্জ উপজেলার বেহেলী ইউনিয়নের রাধানগর খালে বাঁশ দিয়ে তৈরি সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন শিবপুর, চন্ডিপুর, বেহেলী, হরিনগর, ইসলামপুর, মশালঘাট, হাওরিয়া আলীপুর, বেহেলী আলীপুর গ্রামের লোকজন শনির হাওরে কৃষিকাজের জন্য যাতায়াত ও জনবহুল রাধানগর গ্রামের সাধারণ মানুষ, স্কুল কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন। শিশু ও বয়স্করা সাকো পারাপারের সময় দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন অনেকবার। দূর্ভোগটি জনপ্রতিনিধিদের নজরে আনলেও কোন সুফল পায়নি এলাকাবাসী।
এবিষয়ে রাধানগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩য় শ্রেণীর শিক্ষার্থী মাসুমা আক্তার বলেন, আমরা বাশের সাঁকো পারাপারের সময় খুবই ভয় পাই, স্কুলের বইসহ পা পিছলে সাঁকো থেকে পরে অনেকেরই হাত পা ভেঙ্গেছে। ব্রীজ হলে আমরা সহজেই স্কুলে যেতে পারবো।
রাধানগর গ্রামের মুরুব্বি জবান আলী বলেন, অনেক কষ্টে বাশের সাঁকো দিয়ে পার হই। আমি বয়স্ক মানুষ একা সাঁকো দিয়ে চলতে পারি না। খালে ব্রীজ হলে অনেক দিনের কষ্ট দূর হতো।
স্থানীয় ইউপি সদস্য খোকন মিয়া বলেন, রাধানগর খালে বাশের সাঁকোটি ঝুঁকিপূর্ণ, এই খালে ব্রীজ হলে সাধারণ মানুষসহ কৃষকের উপকার হবে।
বেহেলী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান অসীম তালুকদার বলেন, শনির হাওর পারের রাধানগর গ্রামের খালে বাশের সাঁকো পারাপারের সময় দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন অনেকেই। ব্রীজটি জনগুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে শনির হাওরের ফসল তোলার সময় ১০/১২ টি গ্রামের কৃষকের একমাত্র অবলম্বন এই রাস্তা। আমি ব্রীজটি নির্মাণের জন্য খুব শীঘ্রই উপরমহলে যোগাযোগ করবো।
উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান গোলাম জিলানি আফিন্দী রাজু বলেন, হাওর রক্ষা বাঁধ দেওয়ার জন্য আমরা কোটি কোটি টাকা খরচ করি, কিন্তু কৃষক ফসল কিভাবে সহজে গোলায় তুলতে পারে সে চিন্তা করি না। রাধানগর খালে ব্রীজ হলে শনির হাওরের কৃষক সহজেই ফসল তুলতে পারবে, পাশাপাশি উন্নয়নের মহাসড়ক হাওরের মানুষের কাছে পৌছাবে। আশাকরি চলতি অর্থ বছরে এই ব্রীজটি নির্মাণ করা হবে, কারণ ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন এমপি হাওর অঞ্চলের উন্নয়নে আন্তরিক।
উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ইউসুফ আল আজাদ বলেন, এই ব্রীজটি নির্মাণের জন্য ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন এমপি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আশাকরি অর্থ বছরেই ব্রীজের কাজ শুরু হবে,শনির হাওরের কৃষকের মুখে হাসি ফুটবে। সাধারণ মানুষ সহ শিক্ষার্থীদের চলাচলের কষ্ট লাঘব হবে।