ধর্মপাশায় প্রভাবশালীর বেড়ায় অবরুদ্ধ এক অসহায় পরিবার
ধর্মপাশা প্রতিনিধি :
বসত বাড়ির জায়গা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় প্রভাবশালী প্রতিবেশীর দেওয়া বেড়ায় অবরুদ্ধ হয়েছে এক অসহায় পরিবার। ফলে ওই পরিবারের লোকজনকে ভিন্ন পথে যাতায়াত করতে হচ্ছে। এছাড়াও পরিবারটির একটি দোকান বন্ধ করে দিয়েছে ওই প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। উপজেলার পাইকুরাটি ইউনিয়নের লেঙ্গুর গ্রামের বাসিন্দা মহেন্দ্র দাসের পরিবারের সাথে এমনটি ঘটেছে। অভিযুক্ত জানু মিয়া ও মনু মিয়া একই গ্রামের মৃত আব্দুল ছাত্তারের ছেলে।
জানা যায়, জানু মিয়া ও মনু মিয়ার সাথে মহেন্দ্র দাসের দীর্ঘ দিন ধরে বসত বাড়ির জায়গা সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছে। মহেন্দ্র দাসের বাড়ির পশ্চিম ও দক্ষিণ পাশে প্রতিপক্ষের বসতি। উত্তর দিকে খালি জায়গা পেরিয়ে প্রতিপক্ষের আত্মীয়দের বসবাস। পূর্ব দিকে একটি ডোবা ও অন্য প্রতিবেশীদের বাড়ি ঘর। মহেন্দ্র দাস ও তার পরিবারের লোকজনকে বাড়ির উত্তর দিকের খালি জায়গা দিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে মূল সড়কে যাতায়াত করতে হয়। সপ্তাহখানেক আগে জানু মিয়া ও মনু মিয়া মহেন্দ্র দাসের বাড়ির পশ্চিম এবং উত্তর পাশে বাঁশ ও ডালপালা দিয়ে বেড়া দিয়েছে। ফলে মহেন্দ্র দাসসহ তার পরিবারের লোকজনকে দক্ষিণ-পূর্ব কোণ দিয়ে অনেক দূর ঘুরে মূল সড়কে যাতায়াত করতে হচ্ছে। গাছতলা বাজারে ভাড়ায় নেওয়া মহেন্দ্র দাসের একটি দোকান রয়েছে। সে দোকনটিও বন্ধ করে দিয়েছে ওই প্রভাবশালীরা। মহেন্দ্র দাসের ছেলে নিরঞ্জন একজন অটোরিকশা চালক। কাজ শেষে অটোরিকশাটি বাড়িতে এনে রাখতো। কিন্তু সে রিকশাটি এখন বাড়িতে আনতে পারছে না। ফলে বাধ্য হয়ে রিকশাটি হয়ে অন্য জায়গায় রাখতে হচ্ছে।
গণমাধ্যমকর্মীদের বিষয়টি অবগত করার কারণে অভিযুক্তরা হুমকি ধামকি দিচ্ছে বলে জানিয়ে মহেন্দ্র দাস বলেন, ‘আমার জায়গাতেই বেড়া দিয়ে আমাকে বাড়ি থেকে বের হতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। আমার পৈত্রিক জায়গা দখলের চেষ্টা করছে তারা। পুলিশ এসেও ব্যর্থ হয়ে ফিরে যাচ্ছে। এ অবস্থায় খুব অসহায়ত্বের মধ্যে দিনযাপন করছি।’
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত জানু মিয়া ও মনু মিয়ার সাথে কথা বলতে তাদের মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও মুঠোফোন রিসিভ করেননি। তাই বক্তব্য জানতে বুধবার সকালে অভিযুক্তদের বাড়িতে গেলে জানু মিয়া ও মনু মিয়া কাউকেই বাড়িতে পাওয়া যায়নি। তবে জানু মিয়া ও মনু মিয়ার পরিবারের কয়েকজন নারী সদস্য জানান, মহেন্দ্র দাস তাদের জায়গা দখলের পায়তারা করছে বলে এভাবে বেড়া দেওয়া হয়েছে।
পুলিশের কাছ থেকে এ সংক্রান্ত বিরোধের বিষয়টি শুনেছেন বলে জানিয়ে পাইকুরাটি ইউপি চেয়ারম্যান ফেরদৌসুর রহমান বলেন, ‘বিবাদগ্রস্থ কোনো পক্ষই বিষয়টি আমাকে জানায়নি। তারা আমাকে জানালে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য চেষ্টা করা হতো।’
ধর্মপাশা থানার এএসআই মো. কামাল হোসেন জানান, বিবাদী পক্ষকে কয়েকবার থানায় আসতে বললেও তারা আসেনি। একাধিকবার সেখানেও গিয়ে তাদের (বিবাদী) বসানো যায়নি। তাদের বিরুদ্ধে ৭ ধারায় মামলা করার জন্য কাগজপত্র কোর্টে পাঠানো হয়েছে।
ধর্মপাশা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সুজন চন্দ্র সরকার জানান, যাইহোক না কেন চলাচলের রাস্তাতো বন্ধ করতে পারেনা। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবেন বলে জানান তিনি।