রাত ১০:০৫,   বুধবার,   ১১ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,   ২৬শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,   ৯ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

ধর্মপাশায় প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞায় বন্ধ পানির সেচ, বিপাকে ৬ শতাধিক কৃষক

সাজিদুল হক :
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার বংশীকুন্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নের লুঙ্গাতুঙ্গা জলমহাল থেকে আশপাশের বোরো জমিতে পানি সেচ দিতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় ৬ শতাধিক কৃষক। প্রশাসনিক আদেশ পালন করতে জলমহালের ইজারাদার জলমহাল থেকে জমিতে পানি সেচতে নিষেধ দিচ্ছেন কৃষকদের। ফলে কয়েকদিন ধরে কৃষকেরা জমিতে পানি দিতে না পারায় ফসলের উপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়েছে।
জানা যায়, জেলা প্রশাসনের আওতাধীন ৬৫ একর আয়তনের এ জলমহালটি স্থানীয় রংচী জনকল্যাণ সমবায় সমিতি লিমিটেড ১৬ লাখ টাকা মূল্যে ছয় বছর মেয়াদে ইজারা পায়। এ জলমহালের পানি থেকে আশপাশে ৮/১০টি গ্রামের ৬ শতাধিক কৃষক তাদের বোরো জমিতে পানি সেচ দিয়ে থাকে। সম্প্রতি এ জলমহাল সেচে মাছ শিকার করা হচ্ছে এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে জলমহাল থেকে পানি সেচে নিষেধাজ্ঞা জারি করে উপজেলা প্রাশাসন। আর প্রশাসনের নির্দেশনা মানতে ইজারাদারও কৃষকদের পানি সেচতে বাঁধা দিচ্ছেন। এতে করে বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় কৃষকেরা।
রংচী গ্রামের কৃষক আব্দুল হালিম, খিদিরপুর গ্রামের কৃষক শফিকুল ইসলাম ও রুহুল আমিন, নিশ্চিতপুর গ্রামের কৃষক আলম মিয়াসহ আরও অনেকেই জানান, ‘দীর্ঘ বছর ধরে এ জলমহাল থেকেই আশপাশের জমিগুলোতে পানি দেওয়া হয়। আগে কোনোদিন পানি দেওয়ায় নিষেধ আসেনি। কিন্তু কয়েকদিন ধরে ইজারাদার ও তাদের লোকজন জলমহাল থেকে জমিতে পানি দিতে নিষেধ করছে। এতে করে জমির জমির ফসল মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। তাই এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তাঁরা।
রংচী জনকল্যাণ সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি শামছু নূর জানিয়েছেন, জলমহাল সেচে মাছ শিকারের জন্য কখনই মেশিন বসানো হয়নি। কৃষকেরা তাদের জমিতে পানি দিতে মেশিন বসিয়ে ছিল। প্রশাসন থেকে পানি সেচে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। আমরা কৃষকদেরকে পানি সেচ দিতে নিষেধ দিয়েছি। কিন্তু কৃষকেরা তা মানছেনা।’
এদিকে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. সালমুন হাসান বিপ্লব গত মঙ্গলবার জলমহালটি পরিদর্শন করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, জলমহাল সেচে মাছ শিকারের জন্য কোনো মেশিন সেখানে পাওয়া যায়নি। তবে একটি মেশিন পাওয়া গেছে যা দিয়ে জমিতে পানি দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।’
ধর্মপাশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আবু তালেব বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে এ জলমহাল থেকে জমিতে পানি দেওয়া হয়। কিছুদিন আগে কৃষকেরা ধানে পানি দেওয়ার জন্য মেশিন লাগিয়েছিল। কিন্তু স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করে যে ইজারাদার জলমহাল সেচে মাছ শিকার করছে। এ কারণে ইজারাদারকে শোকজ করা হয়। কিন্তু বিল সেচার জন্য মেশিন লাগানো হয়নি। কৃষকেরা আবেদন জানালে জমিতে পানি সেচে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে জলমহাল শুকিয়ে মাছ ধরা যাবে না, এটি অপরাধ।’