রাত ১০:০৪,   রবিবার,   ১০ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,   ২৫শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,   ৮ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

পাথারিয়ায় ট্রলারঘাটে প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের অবৈধভাবে চাঁদা আদায়

নোহান আরেফিন নেওয়াজ :
দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার পাথারিয়া ইউনিয়নের পার্শ্ববর্তী পাথারিয়া-ভাটিপাড়া ট্রলারঘাটে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।
প্রতিবছর স্থানীয় ভূমি অফিস থেকে ইজারা নিয়ে ট্রলারঘাটে রাজস্ব আদায় করার কথা থাকলেও দায়িত্বশীলদের চোখ ফাঁকি দিয়ে গত দুই বছর ধরে অবৈধভাবে ফায়দা লুটছে একটি প্রভাবশালী মহল। ট্রলার ঘাটের সীমানা নির্ধারণের অন্তঃদ্বন্দ্বের সুযোগে ইজারা না নিয়ে নৌকার প্রতি ২০-৫০ টাকা হারে চাঁদা তুলা হচ্ছে নৌকা চালকদের কাছ থেকে। যা ভাগভাটোয়ারা করে নিচ্ছেন স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল। অনেকটা জোরজবরদস্তি করে মাঝিদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করা হলেও প্রভাবশালী এই সিন্ডিকেটের ভয়ে মুখ খুলছেন না কেউই।
জানা যায়, পাথারিয়া ভাটিপাড়া ট্রলারঘাটে প্রতিদিন যাত্রা উঠানামা করে প্রায় দুই শতাধিক নৌকা। এই নৌপথ দিয়ে দিরাই, খালিয়াজুরি, জামালগঞ্জ ও দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার অন্তত ৫ টি ইউনিয়নের মানুষ যাতায়াত করে থাকেন। ২০০৪ সাল থেকে এই ট্রলারঘাটটি খাস কালেকশনের আওতায় আসে। দক্ষিণ সুনামগঞ্জের পাথারিয়া ইউনিয়নের ভূমি অফিস থেকে ইজারা নিয়ে খাস কালেকশন করতেন স্থানীয় ইজারাদাররা। সরকার প্রতিবছর এই ঘাট থেকে কয়েক লাখ টাকার রাজস্ব পেত বলে জানা যায়। সর্বশেষ ২০১৮ সালে প্রায় ৫ লাখ টাকায় ইজারা নেয়া হয়েছিল বলে জানা যায়। তবে সেই বছর ট্রলারঘাটের সীমানা নির্ধারণ নিয়ে দিরাই উপজেলার ভাটিপাড়া ইউনিয়ন ও দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার পাথারিয়া ইউনিয়নের দায়িত্বশীলদের মাঝে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। এই অন্ত দ্বন্দ্বের কারনে ট্রলারঘাট ইজারা বন্ধ করে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। এই সুযোগে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নৌকার প্রতি চাঁদায় আদায় করছেন বলে অভিযোগ পাওয়াগেছে। নৌকার এক বুঝাই প্রতি ২০-৫০ টাকা হারে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে বলে জানা যায়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয় এজেন্টের মাধ্যমে নৌকাওয়ালাদের কাছ থেকে চাঁদা তোলা হচ্ছে। কি কারণে চাঁদা তুলা হচ্ছে এমন প্রশ্ন করলেও সদুত্তর মিলেনি এজেন্টের কাছ থেকে।
নাম প্রকাশে ইচ্ছুক এক নৌকা চালক বলেন, আমি বোঝাই প্রতি ৩০ টাকা দেই। নৌকার আকার অনুযায়ী চাঁদা আদায় করা হয়। ২০-৫০ টাকা হারে চাঁদা তুলেন স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল।অনেকটা জোরজবরদস্তি করে টাকা আদায় করেন তারা। তাদের ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করেন না।
পাথারিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তশীলদার কৃষ্ণকান্ত ধর বলেন, ২০০৪ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত পাথারিয়া ট্রলারঘাট ইজারা দিয়ে খাস কালেকশন করা হয়েছে। পাথারিয়া ইউনিয়নের গাজীনগরের বাঁধ নির্মাণের কারণে নৌকা দিরাই উপজেলার ভাটিপাড়া সীমানায় আটকে যায়। সেখানেই বর্তমানে ট্রলারঘাট রয়েছে। তাই দুই ইউনিয়নের সীমানা নির্ধারণ দ্বন্দ্বে বর্তমানে খাসকালেকশন বা ইজারা বন্ধ রয়েছে। তবে ইতোমধ্যে সীমানা নির্ধারণ একটি রিপোর্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি। ট্রলারঘাটে অবৈধভাবে চাঁদা আদায়ের কথা তাঁর জানান নেই বলেন তিনি।
এ ব্যাপারে জানতে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেবুন্নাহার শাম্মীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।