বন্যায় দ. সুনামগঞ্জের মাছের খামারীদের কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি
নোহান আরেফিন নেওয়াজ :
দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নের ইনাতনগর গ্রামের মাছ চাষি আলী আহমদ। ৪০ একর জমিতে বিশাল আকারের ৩ টি পুকুরে নানা জাতের মাছ চাষ করেছিলেন তিনি। সেখানে প্রায় ২০ লক্ষ টাকার বিক্রির উপযোগী মাছ ছিল। কিন্তু ভারতীয় পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টিতে বন্যায় পুকুরগুলো ডুবে গিয়ে সব মাছ ভেসে গেছে। ফলে পুকুরের আয়ের উপর নির্ভরশীল আলী আহমদের কপালে দেখা দিয়েছে চিন্তার ভাঁজ। এই সংকুলান কিভাবে কাটিয়ে ওঠবেন সেই চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন তিনি। শুধু আলী আহমদ নয়, বন্যার পানিতে উপজেলার শতাধিক পুকুরে কোটি টাকার অধিক মাছ ভেসে গিয়েছে।
আলী আহমদ জানান, ধার-দেনা করে পুকুরে ৫ লক্ষ টাকার মাছ চাষ করেছিলাম। এছাড়া মাছের খাবার, কর্মচারীর বেতন সহ ব্যয় হয়েছে আরো ৫ লাখ টাকার বেশি।মাছের ফলন ভালো হওয়ায় মাছ বিক্রির উপযুক্ত আকারের ছিল। হঠাৎ বন্যায় পুরো এলাকায় পানি উঠে যাওয়ায় পুকুরের সব মাছ ভেসে গেছে। এখন সংসার কীভাবে চলবে আর ঋণের টাকাসহ দোকানের বাকি টাকা পরিশোধ কীভাবে হবে এই নিয়ে চিন্তিত তিনি।
একই ইউনিয়নের কাদিপুর গ্রামে মহাসিং নদীর অববাহিকায় ১০ একর জমিতে দাদিমা মৎস্য খামার গড়ে তুলেন সাফিউল ইসলাম সুস্বাদ। তার খামারে বিক্রির উপযোগী নানা প্রজাতির প্রায় কোটি টাকার মাছ ছিল। কিন্তু বানের পানিতে তার খামারের সব মাছ ভেসে গেছে। এতে চরম ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন তিনি। এই ক্ষতির সংকুলান করতে চিন্তার শেষ নেই তার।
জয়কলস ইউনিয়নের আসামপুর গ্রামের মাছের খামারি মাসুম আহমেদ জানান, তার খামারে থাকা রুই, কাতলা, তেলাপিয়াসহ বিভিন্ন জাতের মাছ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। অনেক চেষ্টা করে ও পুকুরের মাছ রক্ষা করতে পারেননি তিনি। এতে তার ২ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে জানান তিনি। এবারের বন্যায় শতশত মাছ চাষি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দাবি করে তিনি জানান, সরকার ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সাহায্য না করলে তারা আর দাঁড়াতে পারবেন না। সরকারের সুদৃষ্টি দাবি করেন তিনি।
এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম সোহাগ বলেন, উপজেলাব্যাপী বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ খামারীর তালিকা করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত এক’শ এর মত ক্ষতিগ্রস্থ পুকুরের তালিকা করে জেলা মৎস্য বিভাগে পাঠানো হয়েছে। পরবর্তীতে সরকারি কোন সহায়তা আসলে তাদেরকে জানানো হবে।