সন্ধ্যা ৬:৩৭,   বুধবার,   ১১ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,   ২৬শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,   ৯ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

বাদাঘাট বাজারে ময়লার স্তুপ : স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে শিক্ষার্থীরা!

আবির হাসান-মানিক :
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার অন্যতম বাণিজ্যিক কেন্দ্র বাদাঘাট বাজারের পার্শ্ববর্তী এলাকায় অবস্থান করা বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চলাচলের মূল রাস্তাটি যেন ডাস্টবিনে পরিণত হয়েছে। এ পথ ধরেই বাদাঘাট ইউনিয়ন পরিষদে যাওয়া আসা করা হয়। বাদাঘাট জামে মসজিদের মূল রাস্তাও বলে যায় এটিকে। অথচ রাস্তাটি পরিণত হয়েছে ময়লা আবর্জনার স্তুপে, যেন দেখার কেউ নেই।
বাজারের মূল পয়েন্ট থেকে ইউনিয়ন পরিষদের রাস্তার প্রবেশ মুখ, বাদাঘাট দাখিল মাদ্রাসা, বাদাঘাট বাজার জামে মসজিদ, বাদাঘাট পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়, বাদাঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং স্কুল মাদ্রাসার দেয়ালের ভিতরে ময়লা আবর্জনার দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ শিক্ষার্থী ও পথচারীরা, বর্ষায় এ ভোগান্তি প্রকট আকার ধারণ করে। যার কারণে ব্যহত হচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক পাঠদান। স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে শিক্ষার্থীসহ পথচারীরা।
আর এ সমস্যা সৃষ্টি হবার পেছনে বাজারের পয়ঃনিস্কাশনের সঠিক ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় কারনেই, এমনটিই জানালেন ভুক্তভোগিরা। প্রতিদিনেই বাজারের পরিছন্ন কর্মীরা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ময়লা আর্বজনা রাস্তার দুই-পাশসহ স্কুল মাদ্রাসার মূল গেইটের সামনে ও ভিতরে স্তুপ করে রাখায় হাজারো শিক্ষার্থী ও পথচারীরা নাক চেপে চলাচলে বাধ্য হচ্ছে দূর্গন্ধের মধ্যে দিয়েই।
ময়লা-আর্বজনার উৎকট দুর্গন্ধে পার্শ্ববর্তী মাদ্রাসার ক্লাস বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। দুর্গন্ধে দূষিত হচ্ছে আশপাশের পরিবেশ। আবর্জনার স্তুপ সরাতে বাজার কর্তৃপক্ষ কার্যকরী পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
অপরদিকে ময়লা আর্বজনার স্তপ পরিণত হয়েছে অর্ধশতাধিক কুকুরের আবাসস্থলে। পাশাপাশি কুকুরের কামড়ের আতঙ্কে রয়েছে চলাচলকারী শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও পথচারীরা।
সূত্রে জানা যায়, বাদাঘাট বাজারের দোকান, বাসা-বাড়ির ময়লা আবর্জনা ও বাজার ঝাড়ু দিয়ে নিয়মিতই এখানে স্তুপ করে রাখা হচ্ছে ময়লা আর্বজনা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের নিষেধ অমান্য করে রাতের আধারে ময়লা আর্বজনা স্তুপ করছে পরিছন্নতার সাথে জড়িতরা।
বাদাঘাট রহমানীয়া আওয়ামী দাখিল মাদ্রাসার কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার পথে ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধে নাক চেপে চলাচল করতে হয়। দম বন্ধ হবার উপক্রম। এসব ময়লা-আবর্জনা অপসারণ করা যাদের দায়িত্ব, তারা এসব গায়ে নিচ্ছে না।
বাদাঘাট রহমানীয় আওয়ামী দাখিল মাদ্রাসার (ভারপ্রাপ্ত) সুপার তাজুল ইসলাম বলেন, সমস্যাটা দীর্ঘদিনের। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রবেশমুখে ময়লা-আবর্জনার ডাস্টবিনে পরিণত করায়, শিক্ষার্থীসহ আমাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। আর বর্ষায় এ সমস্যা বেড়ে প্রকট হয়। একটু বৃষ্টি হলেই অতিরিক্ত দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়। তখন পাঠদানের কার্যক্রম বিঘ্ন ঘটে।
বাদাঘাট বাজার বণিক সমিতির সভাপতি সেলিম হায়দার বলেন, তাহিরপুর উপজেলার অন্যতম বাণিজ্যিক কেন্দ্র বাদাঘাট বাজার। ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট জায়গা নির্ধারণ করতে না পারায় শিক্ষার্থী সহ সাধারণ পথচারী দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সমস্যাটি খুবই দুঃখজনক। বণিক সমিতি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের সাথে সমস্যাটি নিয়ে কথা বলেছে। তিনি স্তুপবাধা ময়লা আর্বজনা অপসারনের জন্য উপজেলা পরিষদের ফান্ড থেকে ৫০ হাজার টাকা অনুদান দিয়েছেন। আশা করি ময়লার স্তুপ অপসারণের মাধ্যমে দ্রুতই এ সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুণ সিন্ধু চৌধুরী বাবুল বলেন, ময়লা আবর্জনা জমে স্তুপ হবার সমস্যাটি বাদাঘাট বাজারের র্দীঘদিনের। ময়লা আর্বজনা পরিষ্কারের জন্য উপজেলা পরিষদ থেকে কিছু টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যাতে করে বাজার কমিটি এ সমস্যাটি দ্রুত সমাধান করিয়ে নিতে পারেন।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিজেন ব্যানার্জি বলেন, সমস্যাটি তিনি শুনেছেন, দ্রুতই এসব আবর্জনা অপসারণের ব্যবস্থা করা হবে।