শিক্ষার্থীদের বেতন মওকুফের দাবিতে ছাত্রদলের স্মারকলিপি প্রদান
স্টাফ রিপোর্টার :
করোনাকালীন সময়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বেতন মওকুফের দাবিতে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারক লিপি প্রদান করেছে জেলা ছাত্রদল।
রোববার (২১ জুন) দুপুরে ছাত্রদলের আহবায়ক জাহাঙ্গীর আলম ও সদস্য সচিব মো. তারেক মিয়া ছাত্রদলের নেতা কর্মীদের নিয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক রায়হান উদ্দিন, জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ ফরহাদ, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক অানোয়ার আলম,মুমিত ইসলাম,রমজানুল করিম পাপন, আতাহার চৌধুরী শাহীন, হুশিয়ার আলম,ওবায়দুল ইসলাম,নাছিম চৌধুরী, জেলা ছাত্রদলের সদস্য খাইরুল হাসান সাজু,মুজিবুর রহমান,ছদরুল আমিন।এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদল নেতা শাহ রাহুল, ছাদিকুর রহমান চৌধুরী,সাইফুল ইসলাম রাহি, মুবিন,সহ আরো অনেকে।
স্মারকলিপিতে ছাত্রদল উল্লেখ করে, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সবসময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির পক্ষে সোচ্চার। করোনা ভাইরাসের কারণে প্রায় দুই মাসের অধিক সময় ধরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে,শুধু বাংলাদেশেই নয়, পৃথিবীর অন্যান্য দেশেও। লক ডাউনের কারণে স্থবির হয়ে আছে বাংলাদেশ সহ বিশ্ব অর্থনীতি।বর্তমান পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের বেতনসহ পড়াশোনার খরচ চালানো তাদের অভিভাবকদের জন্য অত্যন্ত কষ্টকর।তাই বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রতি সদয় হয়ে সরকারী ও বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থীদের বেতনাদি মওকুফ করে দিলে তা হবে মানবতার জন্য এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে টেলিভিশন, অনলাইনে কিছুটা কার্যক্রম চালু থাকলেও সেটি সবার কাছে পৌঁছাচ্ছে না।কিন্তু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন দুই হাজারের বেশী কলেজ এর বাইরে আছে।এক জরিপে দেখা গেছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনলাইন ক্লাস চালানো সম্ভব নয়।এমনকি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থীরাও অনলাইনে ক্লাসে যুক্ত হওয়ার সঙ্গতি নেই। এটির অন্যতম কারণ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক তৃতীয়াংশ শিক্ষার্থী অর্থনৈতিকভাবে অস্বচ্ছল পরিবার থেকে আসে।বেশীরভাগ শিক্ষার্থী বর্তমানে গ্রামের বাড়ীতে আছে।তাদের অনেকেরই স্মার্টফোন, ইন্টারনেট ডেটা ক্রয়ের অার্থিক সামর্থ নেই। এর ওপর অনেকের এলাকায় নেটওয়ার্ক সমস্যা রয়েছে। তাছাড়া অনেক শিক্ষার্থী টিউশনি করে শিক্ষা ব্যয় নির্বাহ করে,সেটাও করোনা মহামারীর কারণে সম্ভব হচ্ছে না।ইন্টারনেটের উচ্চ মূল্য, মূল্যবান ডিভাইস কেনাও অনেক শিক্ষার্থীর পক্ষে অসম্ভব,এর ওপর অনেক স্থানে নিয়মিত বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকার কারণে অনলাইন ভিত্তিক ক্লাস বা পড়াশোনা অব্যাহত রাখা একেবারেই অসম্ভব। তাই সরকারী ও বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়,স্কুল ও কলেজে এই মূহুর্তে অনলাইন ভিত্তিক ক্লাস, ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত রাখার জন্য আপনার নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি।
একইসঙ্গে করোনা মহামারীর বর্তমান পরিস্থিতিতে যে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারী রাজস্ব থেকে বেতন পায় না এবং ঐসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা শিক্ষার্থীদের বেতনের ওপর নির্ভরশীল সেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অার্থিক ঘাটতি সরকারী তহবিল থেকে পূরনের জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।
করোনার অর্থনৈতিক আঘাতে হয়তো অনেকের শিক্ষা জীবনের ইতি টানতে হতে পারে। এই পরিস্থিতির উদ্ভব যাতে না হয় সেজন্য পারিবারিকভাবে অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীদের অার্থিক সহযোগিতার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।
তবে পরবর্তীতে করোনা মহামারীর গতি কিছুটা স্তিমিত হলে ভয়,শঙ্কা ও উদ্বেগকে পেছনে ঠেলে স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত ও সেশনজট সামাল দিতে একটি পরিকল্পিত সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর দিকে এগিয়ে যাওয়াটা সমীচীন হবে বলে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল মনে করে। অবিলম্বে উল্লিখিত দাবিগুলির প্রতি আপনার মনোযোগ অাকর্ষণ করছি এবং অবিলম্বে তা বাস্তবায়নের জন্য আহবান জানাচ্ছি।