সুনামগঞ্জে গলায় দা ঠেকিয়ে টিকটক, ‘কিশোর গ্যাং’র ৮ সদস্য জেলহাজতে
স্টাফ রিপোর্টার :
তাহিরপুর উপজেলার অন্যতম বাণিজ্যিক কেন্দ্র বাদাঘাটে শারীরিক প্রতিবন্ধী কিশোর (দেখতে শিশুদের মতো) শরিফের গলায় দা ঠেকিয়ে টিকটকসহ বিভিন্ন ধরণের আপত্তিকর ভিডিও টিকটকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করার ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে কিশোর গ্যাং এর ৮ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার (২৪ আগস্ট) তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো, উপজেলার বাদাঘাট উত্তর ইউনিয়নের কামড়াবন্দ গ্রামের শেখ আব্দুর রহমানের ছেলে আলম শেখ (২৩), আনোয়ার হাসেন রুমানের ছেলে তারেক (২২), নাজিম উদ্দিনের ছেলে দীপু (২২), বাচ্চু মিয়ার ছেলে রনি (১৭), বড়দল উত্তর ইউনিয়নের মৃত আ. গফুরের ছেলে মোজাম্মেল হক (২২), হাবিবুর রহমান সংগ্রামের ছেলে সাগর (২১), দক্ষিণ বড়দল ইউনিয়নের পাগলপুর গ্রামের হরমুজ আলীর ছেলে মনির মিয়া (১৯)।
পুলিশ জানায়, জুলাইয়ের শেষের দিকে উপজেলার বাণিজ্যিক কেন্দ্র বাদাঘাট বাজারের সততা স্টোরের মোজাম্মেল হকের ফেসবুক আইডি থেকে প্রশাসন ও সাংবাদিকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে কিশোর শরিফের ছবি ও একটি ভিডিও আপলোড করা হয়। ওই ভিডিওতে শরিফ জানায় বাদাঘাটের কয়েকজন যুবক তাকে জোরপূর্বক মদ খাইয়ে বিভিন্ন রকমের টিকটক ভিডিও তৈরি করে তা ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করে।
বিষয়টি সুনামগঞ্জ পুলিশের নজরে আসলে তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতিকুর রহমান ও বাদাঘাট পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ এসআই মাহমুদুল হাসান বিষয়টি গোপনে তদন্ত শুরু করেন।
রোববার দুপুরে শরিফের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ভিডিও ভাইরালের ঘটনার সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে কয়েক জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
রোববার রাতে আটকৃতদের এবং ভিকটিম শরিফকে নিবিড় ভাবে জিজ্ঞাসাবাদে প্রাথমিক ভাবে ঘটনার সঙ্গে আটককৃতদের সম্পৃক্ততা পাওয়ায় রোববার রাতে ভিকটিমের বড় ভাই শামীমের দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে সোমবার দুপুরে তাদেরকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।
শরিফ মিয়া (১৩) উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের ঢালারপাড় (লাউড়েরগড়) গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে। শরিফের মা জানিয়েছেন, জন্মের সময়ই শরিফ স্বাভাবিকের চেয়ে আকারে অনেকটা ছোট ছিল। স্থানীয় ডাক্তার কবিরাজ দেখিয়ে অনেক টাকা পয়সা খরচ করেও শরিফকে স্বাভাবিক করা যায়নি। ছোটবেলা থেকেই সে বাড়ির বাইরে থাকে অনেক চেষ্টা করেও তাকে বাড়ি ফেরানো যায়নি।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে শরিফের বড় ভাই শামীম বাদী হয়ে আটককৃত ৮জন এবং আরও ২ জনকে পলাতক আসামী করে মোট দশ জনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং তথ্য প্রযুক্তি আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।
তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আতিকুর রহমান জানিয়েছেন, ভিকটিমের বড় ভাই শামীম বাদী হয়ে আটককৃত ৮ জন এবং পলতাক আরও ২ জনসহ মোট ১০ জনের বিরুদ্ধে তাহিরপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে।