সুনামগঞ্জে ১৫ হাজার শ্রমিক আনতে কৃষি বিভাগের উদ্যোগ
বিশেষ প্রতিনিধি :
সুনামগঞ্জে বোরো আবাদের ধান কাটার জন্য তীব্র শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। প্রতি বছর দেশের অন্য জেলা গুলো থেকে হাজার শ্রমিক আসলেও এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। করোনা ভাইরোসের কারণে শ্রমিক আসছে না সুনামগঞ্জে। ফলে বিফাকে পড়েছেন হাওরাঞ্চলের লাখো কৃষক।
তবে হাল ছাড়ে নি কৃষি বিভাগ। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে তারাও শ্রমিক আনতে সর্বাত্বক চেষ্ঠা চালাচ্ছে। কৃষি বিভাগ থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় শ্রমিক আনার জন্য সেখানকার কৃষি বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মো. সফর উদ্দিন জানান, প্রতি বছর দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে প্রায় ২৫ হাজার শ্রমিক সুনামগঞ্জে ধান কাটতে আসত। এবার করোনা ভাইরাসের কারণে শ্রমিক আসা কমে গেছে। তবে বোরো ধান কাটার জন্য দেশের পাবনা, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, ভোলা, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনাসহ কয়েকটি জেলার কৃষি বিভাগের সঙ্গে যোগযোগ করেছি শ্রমিক আনার ব্যাপারে। বর্তমানে ৩ হাজার ৪৪৩ জন ধান কাটার শ্রমিক আছেন। আরও ১২ হাজার ২৯৪ শ্রমিক কয়েক দিনের মধ্যে চলে আসবেন। স্থানীয়ভাবে অন্য পেশার লোকজনও ধান কাটা শুরু করেছেন। আশা করছি শ্রমিক সংকট কিছুটা হলেও কমে যাবে কয়েক দিনের মধ্যে।
তিনি বলেন, আমাদের কৃষি বিভাগের ৯২টি কম্পাইন হার্ভেস্টার, ১৯টি রিপার সচল আছে। নতুন করে সরকার থেকে নতুন ৪০টি হার্ভেস্টার ও ২৭টি রিপার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এগুলো ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজে লাগানো হবে।
ধান কাটার শ্রমিক সংকট মোকাবেলায় নানা উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসনও। বালু শ্রমিক, পাথর শ্রমিকসহ যারা লকডাউনের কারণে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন তাদের ধান কাটার আহ্বান জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যারা খেতে ধান কাটতে যাবেন তাদের সরকারি রিলিফ দেয়া হবে। রাতে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে থাকার ব্যবস্থাও করা হবে।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল আহাদ বলেন, কৃষকদের উৎসাহ দিতে আমি নিজেও হাওরে ধান কেটে এসেছি। অন্য পেশার শ্রমিকদের ধান কাটতে আসার জন্য আমরা উৎসাহ প্রদান করছি। শ্রমিক প্রণোদনা হিসেবে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১০ হাজার পিস সাবান, ১০ হাজার পিস বিস্কুট বিতরণ করা হবে। কৃষি যন্ত্র মেরামতের জন্য কৃষকদের সুবিধর্তে কামারের দোকান ও ওয়ার্কশপ খোলা রাখার নির্দেশনা প্রদান করেছি। বৃষ্টি শুরু হওয়ায় দ্রুত ধান কাটার জন্য কৃষকদের বলা হচ্ছে। আগামী ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে হাওরের ফসল কেটে কৃষকের ঘরে তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।