সন্ধ্যা ৭:২৫,   শুক্রবার,   ২৭শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,   ১২ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,   ২৪শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

লকডাউন ভেঙ্গে হাজারো মানুষের গঙ্গাস্নান জাদুকাটা নদীতে

তাহিরপুর প্রতিনিধি:
করোনার জন্য সুনামগঞ্জে সকল ধরনের গণ জমায়তে, সভা, সমাবেশ এবং পর্যটন স্থান গুলোতে নিষেধ আজ্ঞা রয়েছে সেই সাথে নিষেধ আজ্ঞা রয়েছে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সবচেয়ে বড় তীর্থস্থান সুনামগঞ্জ সীমান্তের তাহিরপুরের জাদুকাটা নদীতে হিন্দু সম্প্রদায়ের পুণ্যার্থীরও।
শুক্রবার (০৯ এপ্রিল) সকল নিষেধ আজ্ঞাকে অমান্য করে হাজারো মানুষ জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লকডাউনের মাঝেও অনেক দুর্ভোগ পুহিয়ে স্নানের জন্য সমবেত হয়েছেন।
হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা জানান, চৈত্র মাসের মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদশী তিথিতে জাদুকাটা নদীতে স্নান করলে সব পাপ মোচন হয় বলে প্রচলিত আছে। পুণ্য লাভের আশায় প্রতিবছরই দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে এই সময়ে লাখো মানুষ আসেন জাদুকাটা বা পুণ্যতীর্থে স্নান সারতে। এ নদীতে স্নান করাকে অনেকে গঙ্গাস্নানের সমতুল্য মনে করেন। কিন্তু করোনার জন্য গত বছরও পুণ্যতীর্থে স্নানের অনুষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়, ঐ বছরও একি অবস্থা তাই লকডাউনের মাঝে অনেক ঝুঁকি নিয়ে দুর্ভোগ পুহিয়ে গঙ্গাস্নানের জন্য আমরা হাজারো হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ একত্রিত হয়েছি।
প্রচলিত আছে, ১৪০০ খ্রিস্টাব্দের মাঝামাঝি সময়ে মাকে গঙ্গাস্নান করানোর জন্য যোগ সাধনা বলে পৃথিবীর সমস্ত তীর্থের জল জাদুকাটা নদীর প্রবহমান জলের ধারায় একত্রিত করে মাতৃআজ্ঞা পূরণ করেছিলেন তখনকার লাউর রাজ্যের সাধক ও সিদ্ধপুরুষ অদ্বৈতচার্য। তার সাধনাসিদ্ধ ফল বারুনী যোগ নামে অভিহিত। চৈত্র মাসের মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদশী তিথিতে গঙ্গা, যমুনা, সরস্বতীসহ সাত পুণ্যনদীর প্রবাহ একসঙ্গে জাদুকাটায় (পুণ্যতীর্থে) এসে মিশে বলেও বিশ্বাস করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এজন্য তারা মনে করেন সব তীর্থের সেরা তীর্থ এটি। এখানে স্নান করলে গঙ্গাস্নানের চেয়েও বেশি পুণ্য হয় বলে বিশ্বাস রয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে।
সিলেট থেকে আসা সিমান্ত চক্রবর্তী বলেন, অনেক কষ্ট করে পরিবারকে নিয়ে গঙ্গাস্নান করতে এসেছি, গত বছর আসার কথা ছিল, কিন্তু করোনার আর লকডাউনের জন্য আসতে পারিনি, কিন্তু ঐ বছর টাকা বেশি খরচ করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মনের আশা পূরণ করতে এসেছি।

দোয়ারা বাজার থেকে আসা নিতিশ দে বলেন, আগামী বছর বাঁচব কি না জানিনা তাই লকডাউনের মাঝে গঙ্গাস্নান করতে চলে আসছি যা হবার হবে।
সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো.জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আমরা সব রকমের চেষ্টা করছি জাদুকাটায় (পুণ্যতীর্থে) যাতে কেউ গণ জমায়েত না করে কিন্তু সরকারি বিধি নিষিধ উপেক্ষা করেও অনেকই সেখানে জমায়েত হয়ে গঙ্গাস্নান করছেন।