রাত ১০:৩৭,   সোমবার,   ৭ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,   ২২শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,   ৪ঠা রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

করোনায় বিপাকে দক্ষিণ সুনামগঞ্জের মধ্যবিত্তরা !

নোহান আরেফিন নেওয়াজ :
মরণঘাতী করোনা ভাইরাস কোভিড-১৯ এর প্রভাবে দিশেহারা পুরো বিশ্ব । বাংলাদেশে ও হানা দিয়েছে এই ভাইরাস। ফলে ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে করোনা আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার। মরনঘাতী এই ভাইরাসের বিস্তার রোধে সারাদেশের ন্যায় অঘোষিত লকডাউনে বন্ধ রয়েছে ‘হাওরের উঠানখ্যাত’ দক্ষিণ সুনামগঞ্জের স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালত, কল-কারখানা, শপিংসপ ও সকল ধরণের যানবাহন। তবে নিত্যপ্রয়োজনীয় দোকানপাট ও পণ্যবাহী যান চলাচল সীমিত করা হয়েছে। চলমান অবস্থায় সবশ্রেণির মানুষের সমস্যা হলেও বিপাকে পড়েছেন দক্ষিণ সুনামগঞ্জের মধ্যবিত্তরা। নিম্নবিত্তদের সরকারী সহায়তার পাশাপাশি অনেক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান সাহায্যের হাত বাড়াচ্ছেন, কিন্তু চরম অসুবিধায় দিনপাড় করলেও সামাজিক সম্মান অবক্ষয়ের ভয়ে মধ্যবিত্তরা কাউকে কিছু বলতে পারছেন না।
উপজেলার পাগলা বাজারে ভাত-চায়ের ছোট হোটেলের ব্যবসা আছে হাবিব মিয়ার। ব্যবসা থেকে যে আয় হয় তাতে সংসারটা ভালোভাবে চলে যায়। কিন্তু তার কোনো সঞ্চয় নেই। গত চার বছর ধরে ব্যবসা করলেও এমন সংকটে কখনোই পড়েননি তিনি। তিন সপ্তাহ ধরে দোকান বন্ধ। করোনা পরিস্থিতির কারণে কঠিন অনিশ্চয়তায় পড়ে অন্ধকার দেখছেন চোখেমুখে। কীভাবে দোকান ভাড়া দেবেন, কীভাবে সংসার চালাবেন, সেই চিন্তায় ঘুম আসে না তার।
নাম প্রকাশে অনিচ্চুক এক সেলুন দোকানদার জানান, সরকারী নির্দেশে দোকান বন্ধ রয়েছে অনেকদিন। দৈনিক যা আয় করতাম তা দিয়েই সংসার ভালোভাবে চলতো। সামান্য কিছু সঞ্চয় ছিলো তা দিয়ে টেনেটুনে সপ্তাহখানেক চালিয়েছি। এখন ধারে টাকা এনে চলছি। এমন চলতে থাকলে না খেয়েই মরতে হবে। কারন সংসার চালাতে যুদ্ধ করতে হচ্ছে। চক্ষু লজ্জায় কষ্টগুলো প্রকাশ করা যায় না।
এমন বিপাকে রয়েছেন প্রবাসীর আয়ের ওপর নির্ভরশীলর একাধিক মধ্যবিত্ত পরিবারও। প্রবাসে থাকা উপার্জনকারী ব্যক্তি লকডাউনে থাকায় কাজে যেতে পারছেন না। ফলে টাকা পাঠাতে না পারায় চরম বিপাকে রয়েছেন তারাও। উপজেলায় এমন অনেক মধ্যবিত্ত পরিবার রয়েছেন যারা চোখে ঘুর অন্ধকার দেখছেন কিন্তু চক্ষুলজ্জার ভয়ে কষ্টগুলো প্রকাশ করছেন না।
এ বিষয়ে জানতে কথা হয় দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা জেবুন নাহার শাম্মীর বলেন, মধ্যবিত্তদের তালিকা প্রস্তুত করতে প্রতি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানবৃন্দকে নির্দেশনা দিয়েছি। যদি কেউ তাদের কাছে নাম তালিকাভুক্ত করতে সংকোচ প্রকাশ করেন তবে তারা চাইলে সরাসরি আমাকে ফোনে কিংবা মেসেজের মাধ্যওম নাম তালিকাভুক্ত করতে পারেন। নাম তালিকাভুক্ত প্রত্যেকের বাড়ি বাড়ি সরকারী বরাদ্দকৃত জিআর চাল পাঠিয়ে দেওয়া হবে।