রাত ২:৪৮,   সোমবার,   ২২শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,   ৬ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,   ১৫ই মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি

জগন্নাথপুরে হাওরের বাঁধের কাজ শেষ হওয়ার ৬ মাস হলেও মিলেনি টাকা

রেজুওয়ান কোরেশী :
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় হাওরের ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধ নির্মাণ মেরামত ও সংস্কার প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার ছয় মাসেও পাওনা টাকা পাচ্ছেন না প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি সদস্য সচিব ও সদস্যরা। ফলে প্রকল্প বাস্তবায়নের সাথে জড়িত কৃষকরা বেকায়দায় পড়েছেন। পাওনা টাকার জন্য বারবার ধর্না দিয়েও কোন সদুত্তর মিলছেনা।
উপজেলার মইয়ার হাওরের ২৬ নং প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব নুরুল হক জানান, উপজেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের চাপে ধারদেনা করে ২৮ ফেব্রুয়ারীর মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করেন। আট লাখ টাকা প্রকল্পের মধ্যে বিল পেয়েছেন মাত্র চার লাখ বিশ হাজার টাকা। ছয় মাসেও বাকি টাকা না পাওয়ায় তিনি বেকায়দায় আছেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ঠিকাদারী প্রথায় যখন ফসলরক্ষা বেড়িবাঁধের কাজ হতো তখন জুন মাসে ঠিকাদাররা বিল পেত।এখন ফসল উত্তোলনের পরও ছয়মাসে বিল পাওয়া যায় না। এছাড়াও নানা অজুহাতে বিল কর্তন করা হচ্ছে।
নলুয়ার হাওরের একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি কৃষক আল আমীন বলেন, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন তদারক কমিটির চাপে বাধ্য হয়ে ধারদেনা করে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করি কথা ছিল ফসল উত্তোলনের পর এপ্রিল মাসে চুড়ান্ত বিল পাব। বিল না পাওয়ার পাওনাদারদের চাপে বাড়িতে থাকতে পারছিনা পালিয়ে বেড়াচ্ছি। শুধু নুরুল হক ও আল আমীন নন তাদের মতো অবস্থা উপজেলার ৪৬ টি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি পিআইসির সভাপতি, সদস্য সচিব ও সদস্যদের।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জগন্নাথপুর উপজেলা কার্যালয় ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির লোকজন জানান, জেলার অন্যতম বৃহৎ হাওর নলুয়ার হাওর সহ উপজেলার ছোট বড় ১৫ হাওরে ২০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়। উপজেলাবাসী একমাত্র বোরো ফসলের ওপর নির্ভরশীল। তাই বোরো ফসল রক্ষায় ৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দে ৪৬ টি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি গঠন করে ১৫ ডিসেম্বর থেকে কাজ শুরু করে ২৮ ফেব্রুয়ারীর মধ্যে ফসলরক্ষা বেড়িবাঁধ নির্মাণ মেরামত ও সংস্কার কাজ বাস্তবায়ন করা হয়। তিন কিস্তিতে ৫৮ শতাংশ বিল পরিশোধ করা হয়েছে।
জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান বিজন কুমার দেব বলেন, ঠিকাদারী প্রথার চেয়ে পিআইসি প্রথায় বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন মানসন্মত ও টেকসই হয়। কারণ বাঁধের কাজের সাথে জড়িতরা সবাই প্রান্তিক কৃষক ও জনপ্রতিনিধি। তাদের প্রায় সবার অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো নেই। ধারদেনা করে প্রকল্পের কাজ শেষ করলেও বিল না পাওয়ায় বিপাকে রয়েছেন।
হাওরের ফসলরক্ষা বেড়িবাঁধ নির্মাণ মেরামত ও সংস্কার তদারক কমিটির সভাপতি (ইউএনও) মেহেদী হাসান বলেন, মন্ত্রনালয় থেকে অর্থ ছাড় না হওয়ায় বিল পেতে বিলম্ব হচ্ছে। এবিষয়ে আমরা যোগাযোগ করছি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী সফিকুল ইসলাম বলেন, আশা করছি পিআইসিরা আগামী মাসে চুড়ান্ত বিল পাবে।