টাঙ্গুয়ার হাওরে হবে নৌ-পুলিশ স্টেশন : নৌ পুলিশের ডিআইজি
![](https://newssunamganj.com/wp-content/uploads/2020/09/IMG_20200922_121441.jpg)
তাহিরপুর প্রতিনিধি :
নৌ পুলিশের ডিআইজি মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, হাওর এলাকার ৬ টি জেলায় মাত্র ছয়টি নৌ পুলিশ স্টেশন রয়েছে। জনবল কম থাকায় আমরা ঠিকমতো কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছি না। তবে টাঙ্গুয়ার হাওরে একটি নৌ পুলিশ স্টেশন স্থাপন করলে দুর্ঘটনা প্রবণ তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, ধর্মপাশা এলাকায় নৌ পুলিশের তৎপরতা আরও বাড়ানো যাবে। এজন্য টাঙ্গুয়ার হাওর এলাকায় নৌ-পুলিশের একটি স্টেশন করা হবে।
রোববার (২০ সেপ্টেম্বর) পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থা আয়োজিত ‘হাওরে নৌ দুর্ঘটনায় মৃত্যুর কারণ ও প্রতিকার’ শীর্ষক ভার্চুয়াল আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমোডর গোলাম সাদেক জানিয়েছেন, হাওরাঞ্চলে নৌ দুর্ঘটনায় মৃত্যু কমাতে হাওর অঞ্চলের নৌ-যান সমূহে আরও বেশি তদারকি বাড়ানো হবে। নৌকায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা-সামগ্রী রাখা, অধিক যাত্রীবোঝাই না করা, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় যাত্রীবাহী নৌকা না ছাড়াসহ সকল বিষয়ে আইন মেনে চলতে হাওরের নৌকাগুলোকে বাধ্য করা হবে।
পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাসমির রেজার পরিচালনায় এ অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ, হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের সভাপতি অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক সুনামগঞ্জ জেলায় বিআইডব্লিউটিএর একটি অফিস স্থাপন এবং নৌ-পুলিশের কয়েকটি পুলিশ স্টেশন করার জন্য দাবি জানান।
অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ বলেন, শিপিং অধ্যাদেশ ১৯৭৬ এ অন্যান্য জলাভূমির কথা সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকলেও হাওরের কথা সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ নেই। তাই অনেক সময় নৌ দুর্ঘটনায় দায়ীরা পার পেয়ে যেতে পারেন। তাই অধ্যাদেশে হাওরের বিষয়টা সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানে ভিডিও বক্তব্যের মাধ্যমে হাওরের নৌকার মাঝিরা তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন। মাঝিরা জানান, অনেক সময় যাত্রীদের অসচেতনতা, নৌকার ছাদে অবস্থান করার প্রবণতা, সাঁতার না জানা এবং হুড়াহুড়ির কারণে দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। তাই যাত্রীদের সচেতনতাও প্রয়োজন। তবে অনুষ্ঠানে যুক্ত সবাই নৌকার চালকদের সচেতনতা ও প্রশিক্ষণের অভাবকে দুর্ঘটনার জন্য দায়ী করেন। এজন্য নৌকার মাঝিদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে বলে জানান বিআইডব্লিউটিএ চেয়ারম্যান।
অনুষ্ঠানের সঞ্চালক কাসমির রেজা নৌ দুর্ঘটনার জন্য বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন। তিনি জানান, লাইসেন্স ও ফিটনেস বিহীন নৌকা, চালকদের অসচেতনতা পর্যাপ্ত নিরাপত্তা সামগ্রী নৌকায় না রাখা, আবহাওয়ার পূর্বাভাসকে তোয়াক্কা না করা এবং অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ। এই জন্য প্রত্যেকটি উপজেলায় গুরুত্বপূর্ণ নৌ-ঘাটগুলোতে নৌ পুলিশ এবং বিআইডব্লিউটিএর মনিটরিং জোরদার করতে হবে।
প্রসঙ্গত, গত এক মাসের ব্যবধানে হাওরে ট্রলার ডুবিতে মারা গেলেন ৩০ জন। আর এমন অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু রোধে করনীয়, কারণ ও প্রতিকার শীর্ষক ভার্চুয়াল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।