রাত ১০:৪০,   সোমবার,   ৭ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,   ২২শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,   ৪ঠা রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

তাহিরপুরে ওরস ও পণতীর্থ স্নান একদিনে করার দাবি: ডিসি কাছে খোলা চিঠি

আবির হাসান-মানিক :
সম্প্রতি বিশ্বে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় করোনা ভাইরাস। বিশ্বজুড়ে মানুষ নিজেদের এবং তাদের পরিবারকে করোনা ভাইরাস থেকে রক্ষা করার জন্য প্রয়োজনীয় সাবধানতা অবলম্বন করছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশেও ৩ জনের দেহে করনা ধরা পড়েছে। তাই সাবধানতা অবলম্বন করতে দেশের সকল জায়গায় অতিরিক্ত জনসমাগমজনিত সকল অনুষ্ঠানমালায় কড়াকড়ি আরোপ করেছে সরকার।
এমন অবস্থায় সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলায় শাহ আরেফিন (র:) ওরস এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের পণতীর্থ স্নান ও বারুণী মেলা নিয়ে দেখা দিয়েছে ভিন্নমত। স্থানীয় সচেতন মহলের পক্ষ থেকে সতর্কতা ও সাবধানতার অংশ হিসেবে এবারের এ আয়োজন ৩ দিনের পরিবর্তে ১ দিনে সমাপ্ত করার জন্য জানাচ্ছেন জোর আবেদন। চলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে মত প্রকাশ।
এর প্রেক্ষিতে সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে আগামী ২২-২৪ মার্চ অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া শাহ্ আরেফিন (র.) ওরস ও পণতীর্থ স্নানে লক্ষাধিক মানুষের সমাগমে করোনাভাইরাস সংক্রমণের আশংকায় একটি খোলা চিঠি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হতে দেখা গিয়েছে। চিটির মূল ভাষ্য, জনসাধারণের সুস্থতার দিকটি বিবেচনা করে শাহ আরেফিন (র:) ওরশ এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের পণতীর্থ স্নান ও বারুণী মেলা ৩ দিনের পরিবর্তে ১দিনে সম্পন্ন করার জন্য বলা হয়েছে।
ভাইরাল হওয়া খোলা চিঠি টি হুবুহু তুলে ধরা হলো
‘মাননীয় জেলা প্রশাসক সুনামগঞ্জ, এমপি সুনামাগ্ঞ্জ-১, এবং ৪ আসন, UNO, পুলিশ সুপার, কমান্ডেন্ট বিজিবি, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ এবং সুনামগঞ্জবাসি সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, বর্তমানে করোনা ভাইরাস আমাদের বহুল জনসংখ্যার দেশেও প্রবেশ করছে। যার জন্য ১৭ই মার্চের মুজিব বর্ষের বড় বড় জনসমাগমকৃত অনুষ্ঠানসমূহ জনসাধারণের সুস্থতার কথা বিবেচনা করে স্থগিত করে শুধু মূল অনুষ্ঠানসমূহ করা হচ্ছে। ধন্যবাদ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে সঠিক সিদ্ধান্তগ্রহণ করার জন্য।
আগামী ২২-২৪ মার্চ ২০২০(সম্ভাব্য) লাউড়ের গড় শাহ আরফিন (র:) এর ওরস ও রাজারগাঁও এ হিন্দু ধর্মের পুণ্যস্নানের দিন। যার ফলে এই দুই ধর্মের ভক্তবৃন্দের প্রায় ৪-৫ লক্ষ মানুষের সমাগম ঘটে। এই বিশাল জন সমাগম হওয়া বর্তমান পরিস্থিতিতে সমীচীন নয় ও উদ্বেগজনক বটে। মানুষের মধ্যে করোনাভাইরাস ছড়ানোর আশঙ্কা থেকে যায় খুব বেশি। তাই জনসাধারণের সুস্থতার দিকটি বিবেচনায় নিয়ে এবং ভক্তবৃন্দের মনোবাসনার কথা বিবেচনা করে শাহ আরফিন (র:) এর ভক্তবৃন্দের ভক্তিপ্রদান ও পুণ্যস্নান ১ দিনে শেষ করা হোক এবং ওরস ও স্নান কে কেন্দ্র করে মেলা, কাফেলা, জনসমাবেশ ঘটে এমন অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ করা হোক।
অতএব, সম্মানিত জেলা প্রশাসক সমীপে এই আবেদন যে প্রাণজ্ঞহাতি করোনাভাইরাস এর প্রভাব বিস্তার থেকে সুনামগঞ্জ জেলাবাসী তথা দেশের সর্বসাধারণকে নিরাপদ রাখতে সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার জন্য বিনীত অনুরুধ করা হইল।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সচেতনতামূলক এমন আবেদনজনিত লেখাটিকে অনেকেই সাধুবাদ জানাচ্ছেন। অনেকে এর সাথে একমত পোষণ করে মন্তব্য করছেন। এমনকি লেখাটি স্থানীয় প্রশাসনের নজরে আনতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ওয়ালে শেয়ারও করা হচ্ছে।
তবে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানতে তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিজেন ব্যানার্জির সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ‘যেহেতু এটি একটি ধর্মীয় উৎসব এবং হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের এ স্নান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সুতরাং এখনই কোন সিদ্ধান্ত জানানো যাচ্ছে না। তবে মন্ত্রণালয় থেকে বোর কোন সমাগমের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আছে। তবুও আমরা এটি মেলা উভয় কমিটি, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিবো। চেষ্টা করব বড় সমাগম যাতে না হয়।’