দুপুর ১২:৩৩,   শনিবার,   ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,   ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,   ২১শে মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি

ধর্মপাশায় নিরীহ ব্যক্তির বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর, আহত ১০


ধর্মপাশা প্রতিনিধি :
খেয়া পারাপার নিয়ে তর্কের জের ধরে সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার মধ্যনগর থানার ইটাউড়ি গ্রামের গিরেন্দ্র দাস নামের এক নিরীহ ব্যক্তির বাড়ি ঘরে হামলা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। একই ইউনিয়নের কান্দাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ও ওই খেয়ার মাঝি সাইকুল মিয়া তার লোকজন নিয়ে গত শুক্রবার বিকেলে এ হামলা চালিয়েছে।
এতে নারীসহ উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। আহতরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে। এ নিয়ে উভয় পক্ষই থানায় লিখিত অভিযোগ করেছে।
মধ্যনগর থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গিরেন্দ্র দাসের বাড়ির পেছনে একটি নদী রয়েছে। এই নদী পারাপারের জন্য একটি খেয়া নৌকা রয়েছে। নৌকার মাঝি হিসেবে পার্শ্ববর্তী কান্দাপাড়া গ্রামের মৃত সায়েদ আলীর ছেলে সাইকুল মিয়া দীর্ঘদিন কাজ করে আসছে।
গত শুক্রবার সকালে গিরেন্দ্র দাসের ছেলে বিনয় দাস খেয়া ঘাটের নির্ধারিত স্থান দিয়ে নদী পার হয়ে মধ্যনগর বাজারে যায়। দুপুর দুইটার দিকে বিনয় দাস বাড়ি ফিরতে সাইকুলকে নদী পার করে দিতে বললে সাইকুল তাকে নদী পার করে দেয়নি। বরং সাইকুল এ সময় খেয়া ঘাটের নির্ধারিত স্থানে ছিল না। ফলে বিনয় দাসকে নদী পারাপারের জন্য ঘন্টাখানেক অপেক্ষা করতে হয়। পরে বিনয় দাস অন্য একটি নৌকা দিয়ে নদী পার হয়ে সাইকুলের সাথে তর্ক ও ঝগড়ায় জড়িয়ে পড়ে। ততক্ষণে গিরেন্দ্র দাস ঘটনা স্থলে আসে। ঝগড়ার এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
পরে সাইকুল বাড়ি ফিরে তার লোকজন নিয়ে গিরেন্দ্র দাসের বসত ঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। এতে গিরেন্দ্র দাসের বসত ঘর মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ঘটনায় গিরেন্দ্র দাস, বিনয় দাস, বিনয় দাসের মা গীতা রাণী, সাইকুলের মামাতো ভাই দুলাল মিয়াসহ উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। ওইদিন বিকেলে গিরেন্দ্র দাসের প্রতিবেশী রাজন চন্দ্র দাস কান্দাপাড়া গ্রামের সামনে দিয়ে একটি ছাগল নিয়ে বাড়িতে ফেরার পথে সাইকুলের লোকজন রাজনকে মারধর করে এবং ছাগলটি ছিনিয়ে নেয়।
পরে স্থানীয় ইউপি সদস্য চঞ্চল সরকার ছাগলটি উদ্ধার করে রাজনকে ফিরিয়ে দেয়। খবর পেয়ে মধ্যনগর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ওইদিন রাতেই সাইকুল মিয়া ও শনিবার বিকেলে গিরেন্দ্র দাস মধ্যনগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।
গিরেন্দ্র দাসের ছেলে বিনয় দাস বলেন, ‘সাইকুল মিয়া ও তার লোকজন আমাকে মারধর করেছে। আমাদের বাড়ি ঘরে হামলা চালিয়ে ঘর দোয়ার ভেঙে দিয়েছে।’
খেয়া পারাপার নিয়ে বিনয়ের সাথে কথা কাটাকাটির জেরে উভয় পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে বলে স্বীকার করে অভিযুক্ত সাইকুল মিয়া বলেন, ‘আমরা ওদের (গিরেন্দ্র) বাড়িতে যাইনি। কে বা কারা বাড়িতে ভাঙচুর করেছে জানি না।’
মধ্যনগর থানার এসআই মো. সোহেল রানা বলেন, ‘খেয়া পারাপার নিয়ে এ ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। গিরেন্দ্র দাসের বসতঘর ভাঙচুর হয়েছে। উভয় পক্ষই থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।’