সকাল ৭:০০,   শনিবার,   ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,   ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,   ২০শে মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি

ধর্মপাশায় পিআইসি সভাপতিকে কারাদণ্ডের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

ধর্মপাশা প্রতিনিধি :
ধর্মপাশায় কাইলানি হাওরে ফসলরক্ষা বাঁধের ৫৭ নম্বর প্রকল্পের সভাপতি পরিমল মজুমদারকে কারাদণ্ডের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (১৪ মার্চ) বিকেলে হাসপাতাল রোডস্থ একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ প্রতিবাদ জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠন করেন পিআইসি সভাপতির বড় ভাই প্রাণেশ মজুমদার।
লিখিত বক্তব্য সূত্রে জানা যায়, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি এ প্রকল্পের বিপরীতে প্রথম দফা অর্থ ছাড় দেওয়া হয়। কিন্তু কোনো কাগজপত্র না দিয়ে ভারপ্রাপ্ত ইউএনও আবু তালেব ও সুনামগঞ্জ পাউবোর উপ-সহকারী প্রকৌশলী মাহমুদুল ইসলাম পরিমল মুজমদারকে এল্যাইমেন্ট (প্রকল্প বাস্তবায়ন রেখা) অনুযায়ী কাজ করার জন্য মৌখিক নির্দেশ দেন। পরিমল মজুমদার এ প্রকল্পের ৫০ ভাগ সম্পন্ন করার পর ইউএনও ও মাহমুদুল ইসলাম আকস্মিক বাঁধের এ্যালাইমেন্ট পরিবর্তন করে পরিমল মজুমদারসহ তাদের পরিবারের লোকজনের ফসলী জমির উপর দিয়ে বাঁধ তৈরি করার মৌখিক নির্দেশনা প্রদান করেন। এতে ফসলী জমির ক্ষতি সাধিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিলে পরিমল মজুমদারের বড় ভাই প্রাণেশ মজুমদার বিষয়টি নিয়ে ইউএনও ও সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলেন। তখন ফসলী জমি দিয়ে বাঁধ নির্মাণ হবে না বরং সরকারি জায়গায় বাঁধ নির্মাণ হবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশ্বস্ত করেন। পরে ইউএনও ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী মাহমুদুল ইসলাম পরিমল মজুমদারের রেকর্ডীয় ফসলী জমির উপর দিয়ে কাজ করার জন্য মৌখিক নির্দেশ দেন। গত বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে প্রকল্প এলাকায় গিয়ে পরিমল মজুমদারকে ফিলিং চার্ট ফরম প্রদান করে পূর্ব এল্যাইনমেন্ট (নদীর পাড়) অনুযায়ী কাজ করার জন্য নির্দেশ দেন মাহমুদুল ইসলাম। সে মোতাবেক আবারও কাজ শুরু করেন পরিমল মজুমদার। কিন্তু শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে প্রকল্প এলাকায় ইউএনওসহ মাহমুদুল ইসলাম পরিদর্শনে যান। এ সময় নতুন এ্যালাইমেন্ট অনুযায়ী কাজ না করা ও সরকারি আদেশ অমান্য করার অভিযোগে পরিমল মজুমদারকে গ্রেপ্তার করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদন্ড দেন ইউএনও।
পরিমল মজুমদারের বড় ভাই প্রাণেশ মজুমদার বলেন, ‘কোনো এক ব্যক্তির স্বার্থ রক্ষার জন্য কাজের নকশা পরিবর্তন করে আমার ভাইকে পরিকল্পিতভাবে ফাঁসানো হয়েছে এবং অবৈধভাবে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। পূর্ব এ্যালাইমেন্ট অনুযায়ী বাঁধের অবশিষ্ট কাজ সম্পন্ন করার জন্য জোর দাবি জানাই।’
সুনামগঞ্জ পাউবোর উপ-সহকারী প্রকৌশলী মাহমুদুল ইসলাম বলেন, ‘নদীর পাড় দিয়ে কাজ করার জন্য কখনও বলা হয়নি। বাঁধের স্থায়িত্ব বৃদ্ধির জন্য এল্যাইমেন্ট পরিবর্তন করে কাজ করার জন্য ওই সভাপতিকে বলা হয়েছিল।’
ভারপ্রাপ্ত ইউএনও ও উপজেলা কাবিটা বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি আবু তালেব বলেন, ‘হাওরে ফসলরক্ষার স্বার্থে বিগত দিনের বাঁধের এ্যালাইমেন্টের ওপর দিয়ে কাজ করতে ওই পিআইসি সভাপতিকে বলা হয়েছিল। কিন্তু সভাপতি তার মনমতো কাজ করছিল। নদীর পাড় দিয়ে বাঁধ নির্মাণ হলে তুলনামূলক দুর্বল হবে বিধায় বাঁধ টেকসই করতে এল্যাইমেন্ট পরিবর্তন করে সরকারি জায়গা দিয়ে তা নির্মাণ করা হচ্ছে। এখানে উদ্দেশ্যমূলক ভাবে কিছু করা হয়নি।’