দুপুর ২:২৭,   শনিবার,   ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,   ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,   ২১শে মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি

মেধাবী শিক্ষার্থীকে ল্যাপটপ দিয়ে কথা রাখলেন ডিসি আব্দুল আহাদ

স্টাফ রিপোর্টার :
কথা দিয়েছিলেন অদম্য মেধাবী শিক্ষার্থী কবির হোসেনকে একটি কম্পিউটার ব্যবস্থা করে দিবেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ। বালু, পাথর ও অন্যের জমিতে কাজ করে নিজের পড়ালেখার খরচ চালানো কবির হোসেনেকে গত বছরের ডিসেম্বর মাসে সিলেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তির সুযোগ করে দিয়েছিলেন জেলা প্রশাসক।
সোমবার (১ জুন) তার পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়ার জন্য একটি ল্যাপটপ উপহার দিলেন তিনি।
জানা যায়, সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল হুদা মুকুট এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ এমরান হোসেনের সহযোগিতায় জেলা পরিষদের অর্থায়নে ল্যাপটপটি ক্রয় করা হয় মেধাবী শিক্ষার্থী কবির হোসেনের জন্য। দারিদ্রকে জয় করা অদম্য মেধাবী কবির হোসেনকে গত বছরে সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সিলেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি হওয়ার জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ। সে সময় কবির হোসেন জেলা প্রশাসক কাছে পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়ার জন্য একটি কম্পিউটার প্রদানের জন্য আবেদন জানালে সেই সময় জেলা প্রশাসক কথা দিয়েছিলেন তিনি একটি ব্যবস্থা করবেন। যার প্রেক্ষিতে আজ সোমবার নিজের দেওয়া কথা পালন করে জেলা প্রশাসক জেলা পরিষদের মাধ্যমে তাকে ল্যাপটপ প্রদানের ব্যবস্থা করেন।
কবির হোসেন সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের পৈন্দা গ্রামের কৃষক শুকুর আলীর ছেলে। শত কষ্টের মাঝেও পড়াশোনা চালিয়ে সে সিলেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি হওয়ার জন্য সুযোগ পেয়েছিল এবং মেধা তালিকায় ৯০তম স্থান অধিকার করেছিল।
স্কুলে পড়া চলাকালীন সময়ে কবির হোসেন বালু পাথর উত্তোলন ও অন্যের জমিতে কাজ করে নিজের পড়ালেখার খরচ চালিয়েছেন। এছাড়া সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের ভর্তির পর তিনি কলেজ হোস্টেলে থেকে টিউশনি করে নিজের পড়ালেখার খরচ চালিয়েছেন। কবির হোসেনের বাবা একজন গরীব কৃষক। কবির হোসেনের ৩ ভাই ও ৩ বোন রয়েছে যার মধ্যে সে চতুর্থ।
ল্যাপটপ পাওয়ার জেলা প্রশাসকের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে কবির হোসেন বলেন, স্যার আমাকে কথা দিয়েছিলেন আমাকে একটি কম্পিউটার ব্যবস্থা করে দিবেন। আমি আজ যখন স্যারের ফোন পেয়ে অফিসে গেলাম তিনি যখন আমাকে ল্যাপটপটি হাতে তুলে দিলেন আমি তখন ভাষা হারিয়ে ফেলেছি, কিভাবে আমি স্যারকে ধন্যবাদ দিবো। স্যার আমাকে বলেছেন তোমার পড়াশুনা চালিয়ে গিয়ে একজন বড় ইঞ্জিনিয়ার হতে হবে দেশের সেবা করার জন্য, আমি সেটাই করবো। স্যার আমাকে পড়ালেখার জন্য সবরকমের সহযোগিতা করেছেন উনার কাছে আমি আজীবনের জন্য ঋণী।
সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বলেন, কবির হোসেন একজন মেধাবী শিক্ষার্থী। তার একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ রয়েছে। সে আমাকে বলেছিলো সে ইঞ্জিনিয়ার হতে চায় এবং তার একটি কম্পিউটার প্রয়োজন। আমি কথা দিয়েছিলাম ব্যবস্থা করবো সেটাই আজ পূরণ করলাম, যার জন্য আমি জেলা পরিষদকে ধন্যবাদ দিবো। সে বড় হয়ে দেশ ও দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাক সেটাই আমাদের প্রত্যাশা।