রাত ৯:৩৮,   শনিবার,   ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,   ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,   ১৮ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

জগন্নাথপুরে বিলে মাছ ধরা উৎসব

জগন্নাথপুর প্রতিনিধি:

উৎসবমুখর পরিবেশে পলো (মাছ ধরা বাঁশের ছাট) বাওয়া উৎসবে মাছ ধরছেন বিভিন্ন গ্রামের লোকজন।

মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) সকাল থেকে পলো বাওয়া শুরু হয়ে চলে সন্ধা পর্যন্ত। জগন্নাথপুরের বাউরকা বিলে দিনব্যাপী চলে পলো বাওয়া (মাছ ধারার) উৎসব।

এক সময় গ্রামবাংলার ঐতিহ্য ছিল দল বেঁধে মাছ ধরা। গ্রামের বিভিন্ন বয়সী মানুষ দিনক্ষণ ঠিক করে মাছ ধরার উৎসবে মেতে উঠত। কালের বিবর্তনে গ্রামীণ অন্যান্য ঐতিহ্যের মতো মাছ ধরা উৎসবটাও বিলুপ্ত প্রায়।
তবে সেই চিত্র ধরে রাখতে শীতের তীব্রতা পুরোপুরি না কাটলেও বিলের ঠান্ডা পানিতে একঝাঁক মাছ শিকারি নেমেছেন। হই-হুল্লোড় শব্দে মুখরিত পুরো এলাকা। আর এমন দৃশ্য দেখতে মেতে ওঠে উপজেলার পাটলী ইউনিয়নের প্রভাকরপুর গ্রামের মানুষ। বিলের দুই পাড়জুড়ে মাছ ধরা দেখতে ভিড় করে হাজারো দর্শনার্থী।

বিলটি প্রভাকরপুর গ্রামের হলেও পলো বাওয়া উৎসবে অংশ নেয় আশপাশের গ্রামের প্রায় ১ হাজার মাছ শিকারি। পলোতে ধরা পড়ে বোয়াল, শোল, মাগুর, গজারসহ বিভিন্ন জাতের মাছ।
স্থানীয়রা বলেন, প্রতিবছর দুবার করে এই বিলে পলো দিয়ে মাছ ধরার উৎসব হয়। তবে বিলে মাছের নড়াচড়া ও পানির পরিমাণের ওপর ভিত্তি করে এই উৎসব বছরে তিনবারও হয়। গ্রামবাসীর সিদ্ধান্তে নির্দিষ্ট দিনের আগে কেউ সেই বিলে মাছ শিকার করে না। নির্দিষ্ট দিনে সকাল থেকে মাছ ধরার জন্য শিকারিরা বিলে অংশ নেন।

প্রভাকরপুর গ্রামের শেবুল মিয়া বলেন, প্রতিবছর বিলে মাছ ধরতে আসি। এবারও এসেছি। মাছ পাওয়া বা না পাওয়া বড় নয়। সবাই মিলে আনন্দ করছি, হই-হুল্লোড় করছি এটাই অনেক কিছু।
তার পরও আমি একটি শোল মাছ পেয়েছি। আনন্দ লাগছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ইয়াকুব আহমদ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমাদের গ্রামে এই পলো বাওয়া উৎসব হচ্ছে। এখন মাছ কমে গেছে। আগে বেশি মাছ পাওয়া যেত। তার পরও প্রতিবছর এই বিলে উৎসবমুখর পরিবেশে পলো বাওয়া উৎসব হয়। আমি মাছ শিকার না করতে পারলেও পাড়ে দাঁড়িয়ে দেখি এবং আনন্দ পাই।