রাত ৩:৫৩,   শুক্রবার,   ২৭শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,   ১১ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,   ২৩শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

জগন্নাথপুর-সিলেট সড়ক, কাজ শেষ হওয়ার আগেই ভাঙ্গন

জগন্নাথপুর প্রতিনিধি:
জগন্নাথপুর-বিশ্বনাথ-রশিদপুর সড়ক সংস্কার কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমন অনিয়মের ব্যাপারে জগন্নাথপুর উপজেলা পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, ২০১৯ সালে সড়কের জগন্নাথপুর উপজেলা অংশের ১৩ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের জন্য ২৫ কোটি টাকার দরপত্র আহ্বান করা হলে মাদারীপুরেরর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হামীম সালেহ (জেভি) অংশ নেয়। এসময় দ্রুত সড়কের কাজ বাস্তবায়ন করতে ২০ শতাংশ অতিরিক্ত দরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ প্রদান করা হয়। সে অনুযায়ী ২০২০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে সড়কে কাজ শুরু এবং চলতি বছরের ৩১ মার্চ কাজ শেষ করার কথা।
জগন্নাথপুর পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সহ সভাপতি রব্বানী মিয়া বলেন, ‘জগন্নাথপুর বিশ্বনাথ রশিদপুর ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় নেওয়া হচ্ছে। সড়ক সংস্কার কাজে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করায় কাজ শেষ হওয়ার আগেই ধসে পড়েছে সড়ক। সড়কের কাজ বাস্তবায়নকারী স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের আঁতাত করে সরকারি অর্থ লুটপাট হচ্ছে। এতে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তদন্তপূর্বক এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে আমরা লিখিত অভিযোগ করেছি।’
জগন্নাথপুর উপজেলা পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম খেজুর বলেন, ‘জগন্নাথপুর উপজেলা অংশে ১৩ কিলোমিটার সড়কের আটঘর এলাকার কার্পেটিং সড়ক ধসে পড়েছে। এছাড়া ভবেরবাজার, রতিয়ারপাড়া, বড়কাপন, হবিবপুর এলাকায় সড়কের কাজ শেষ হতে না হতেই ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। সড়কের কাজ শেষ হওয়ার আগে সংস্কারকৃত সড়কটি ভাঙন আমাদেরকে হতাশ করেছে।’

জগন্নাথপুর উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলী গোলাম সারোয়ার বলেন, জগন্নাথপুর উপজেলা অংশের কাজ ৯০ ভাগ শেষ হয়েছে। কাজে কোন অনিয়ম হচ্ছে না। আমরা সার্বক্ষণিক তদারকি করছি।

জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান বলেন- ‘সড়ক সংস্কার কাজে অনিয়মের অভিযোগ প্রতিনিয়ত লোকজন আমাদেরকে জানাচ্ছেন। আমি সংশ্লিষ্টদের সাথে এ নিয়ে কথা বলে দ্রুত প্রাক্কলন অনুযায়ী কাজ শেষ করতে অনুরোধ করেছি।’

জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন, ‘পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’

প্রসঙ্গত, বিভাগীয় শহর সিলেট ও রাজধানী ঢাকাতে যাতায়াত করতে সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের রশিদপুর হয়ে জগন্নাথপুর ও বিশ্বনাথ উপজেলাবাসীর একমাত্র সড়ক এটি। সড়কের জগন্নাথপুর উপজেলা অংশে ১৩ কিলোমিটার ও বিশ্বনাথ উপজেলা অংশের ১৩ কিলোমিটার যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় দুই উপজেলার লোকজন সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েন। এ অবস্থায় ২০১৯ সালে সড়কের জগন্নাথপুর উপজেলা অংশের ১৩ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের জন্য ২৫ কোটি টাকার দরপত্র আহ্বান করা হলে মাদারীপুরেরর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হামীম সালেহ (জেভি) অংশ নেয়। এসময় দ্রুত সড়কের কাজ বাস্তবায়ন করতে ২০ শতাংশ অতিরিক্ত দরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ প্রদান করা হয়।