ভোর ৫:৩১,   রবিবার,   ২৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,   ১৩ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,   ২৫শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

জামালগঞ্জে সারের কৃত্রিম সংকট, চড়ামূল্যে বিক্রির অভিযোগ

আব্দুল্লাহ আল মামুন,জামালগঞ্জ:
হাওরের মানুষের একমাত্র অবলম্বন বোরো ফসল। চলতি মৌসুমে এ ফসল উৎপাদনে ইউরিয়া সার সংকটে কৃষকরা। উপজেলার ৬ টি ইউনিয়নে ৬ জন সার ডিলার থাকলেও উত্তর ইউনিয়নের ডিলার মৃত্যু বরণ করায়, ৫ ইউনিয়নে সার বিতরণ প্রক্রিয়া সরকারি ভাবে চললেও পুরো উপজেলায় চাহিদা অনুযায়ী সার সরবরাহ না থাকায় কৃষকদের মধ্যে রয়েছে হাহাকার।
উপজেলার ৫৪ টি ওয়ার্ডে সার ডিলার নির্দিষ্ট ভাবে থাকলেও অনেক ওয়ার্ডে ডিলার নেই। যার কারণে অবৈধ ব্যবসায়ীরা ফায়দা নিচ্ছে। এমনকি কোন ওয়ার্ড ডিলারের বিক্রয় কেন্দ্রে সরকারি মূল্য তালিকার নির্দেশিকা বোর্ড ঝোলানো নেই।সরকারি মূল্য প্রতি বস্তা ইউরিয়া সার ৮শ টাকা হলেও কৃষকের কাছ থেকে কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে চড়ামূল্য নেওয়া হচ্ছে।
ভীমখালী ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের ডিলার মিহির লাল ৭ নং ওয়ার্ডে চড়ামূল্যে সার বিক্রয় করছে বলে উপজেলা সার ও বীজ মনিটরিং কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে গত ১/১২ /২০ তারিখে আবেদন করেন কৃষক।
নির্বাহী কর্মকর্তা মিহির লালকে তার নির্দিষ্ট স্থান ৫ নং ওয়ার্ডে সার বিক্রয়ের নির্দেশ দিলেও চড়ামূল্যে ৭ নং ওয়ার্ডে বিক্রি অব্যাহত রেখেছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গত ৬ জানুয়ারি ৭ দিনের সময় দিয়ে নোটিশ দিলেও কর্নপাত করছে না। সারের মূল্য বৃদ্ধি করতে কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে ওয়ার্ড ডিলাররা। ফেনারবাঁক ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের রেন্টু সরকার বলেন, আমাদের ওয়ার্ডে কোন ডিলার নেই, এক বস্তা সার ১১শ টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে খুচরা দোকানদারদের কাছ থেকে। না হলে খালিয়াজুরী থানার গাগলাজুর বাজার থেকে আনতে হয় বেশি দামে। আমানীপুর বাজার কমিটির সভাপতি আব্দুল আলীম বলেন কৃষকরা ১ হাজার টাকা করে সারের বস্তা কিনে। এই বাজারে একজন দোকানদার ৩০/৫০ বস্তা সার অন্য জায়গা থেকে কিনে এখানে খুচরা বিক্রি করে বেশি দাম দিয়ে, কারণ এখানে ডিলার নেই।
গজারিয়া বাজারের সার ডিলার সোহেল রানা বলেন, অনেক দিন যাবৎ সার আসছে না, যাদের কাছে সার আছে তারা চড়ামূল্যে বিক্রি করছে। বেহেলী ইউনিয়ন থেকে আফাজ উদ্দিন, তাজুল ইসলাম বলেন, সারের মূল্য বেশী পাওয়ার জন্য ঘরে স্টক করে রেখেছে ডিলার ও অসাধু ব্যবসায়ীরা। জমিতে সময়মত সার দিতে না পারলে ফসল কম হবে।
বেহেলীর ইসলামপুর গ্রামের কৃষক আলমাস উদ্দিন বলেন, ১০ দিন যাবত আমাদের এলাকায় ইউরিয়া সার নেই, এবার বোরো ফসল উৎপাদন ব্যহত হবে।
ফেনারবাঁক ৮ নং ওয়ার্ডের নিরেশ সরকার বলেন, ওয়ার্ড ডিলারের নাম ধরে বিনাজুরা বাজারে অবৈধ ভাবে ৯৮০ টাকা ধরে সার বিক্রি করছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ দেব বলেন, সারের কোন সংকট নেই। আগামীকাল ১০০ টন, পরের দিন ১৬০/১৭০ টণ সার আসবে। যারা কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে বেশি দামে সার বিক্রি করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কৃষি অফিসের টিম সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছে।