রাত ৯:১৮,   শুক্রবার,   ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,   ৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,   ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

স্থানীয় আ.লীগ নেতাদের সাথে পরিকল্পনা মন্ত্রীর বিরোধ প্রকাশ্যে

স্টাফ রিপোর্টার:

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগ মুহূর্তে সুনামগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য, পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নানের সঙ্গে দলের নেতাদের বিরোধ বেড়েছে ।সম্প্রতি বিএনপির হরতাল-অবরোধের মধ্যে দলীয় কর্মসূচি পালনের সময় এই বিরোধ স্পষ্ট হয়েছে।

গত ২৬ অক্টোবর পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান তার নির্বাচনী এলাকার জগন্নাথপুর উপজেলায় একটি শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে যোগ দেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিকে বাদ দিয়ে ঐ সভায় তিনি জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের এক সদস্য কে দিয়ে সভায় সভাপতিত্ব করান।
এরই প্রতিবাদে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মিজানুর রশীদের নেতৃত্বে মন্ত্রীর সামনেই দলের বেশকিছু নেতাকর্মী সভাস্থল ত্যাগ করে প্রতিবাদ সভা করেন।
এর জের ধরে ২৮ অক্টোবর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মিজানুর রশীদ পৃথক উন্নয়ন ও শান্তি সমাবেশ করেন। বিশাল এই শান্তি সমাবেশে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক কমিটির বেশিরভাগ নেতারা অংশ নিলেও অংশ গ্রহণ করেন নি পরিকল্পনা মন্ত্রীর আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রিজু।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ৮ নভেম্বর একই দিনে একই সময় জগন্নাথপুরে পৃথক পৃথক সভা অনুষ্ঠিত হয় । ঐ দিন বেলা ২ টায় স্থানীয় আব্দুস সামাদ আজাদ অডিটোরিয়ামে পরিকল্পনা মন্ত্রী তার স্বেচ্ছাধীন তহবিলের ৪ লক্ষ ৮২ হাজার ৮২৫ টাকা ৪৫০ জনের মধ্যে এক হাজার ৮৫ টাকা করে বিতরণ করেন। উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে এই সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাজেদুল ইসলাম। একই সময়ে জগন্নাথপুর বাজারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মিজানুর রশীদের সভাপতিত্বে বিএনপি- জামাতের নৈরাজ্য ও অগ্নি সন্ত্রাসের প্রতিবাদে বিশাল গণ মিছিল ও শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আজিজুস সামাদ আজাদ ডন।

সম্প্রতি বিএনপির অবরোধ-হরতাল কর্মসূচি শুরুর পর থেকে পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নানের নির্বাচনী এলাকায় দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে কর্মসূচি পালন করেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ, সহযোগী সংগঠন।

দলীয় সূত্রে জানা জানা যায়, জগন্নাথপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মিজানুর রশীদের সঙ্গে পরিকল্পনা মন্ত্রীর অনুসারীরা পৃথক কর্মসূচি পালন করেছেন। যার আয়োজিত নেতৃত্ব দিচ্ছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রিজু। একইভাবে সম্প্রতি পরিকল্পনা মন্ত্রীর নিজ উপজেলা শান্তিগঞ্জেও দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন দলীয় নেতাকর্মীরা।
প্রায় বছর খানেক আগে সম্মেলনের মাধ্যমে শান্তিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। সম্প্রতি পূর্বে ঘোষিত কমিটির নেতাদের বাদ দিয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রীর ছেলে কে ১ম সহ সভাপতি করে নিজের পছন্দের লোকদের দিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়ে পৃথক কর্মসূচি পালন করেছেন।
এ ব্যাপারে জগন্নাথপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মিজানুর রশীদ নিউজসুনামগঞ্জডটকমকে বলেন, পরিকল্পনা মন্ত্রী সাংগঠনিক নিয়ম নীতি না মেনে প বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করতে চান। এর জন্য আমরা পৃথকভাবে কেন্দ্রঘোষিত নির্দেশনা অনুযায়ী পৃথক কর্মসূচি পালন করেছি। আমরা আওয়ামী লীগের কর্মসূচি পালন করেছি,তিনি তার ব্যক্তিগত কর্মসূচি পালন করেছেন। একইভাবে শান্তিগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট বোরহান উদ্দিন দুলন বলেন, সম্প্রতি পরিকল্পনা মন্ত্রীর পছন্দের মানুষদের দিয়ে আওয়ামী লীগের কমিটি করায় পুরনো ও ত্যাগী নেতাকর্মীরা বিক্ষুব্ধ। আমরা সাংগঠনিক শৃঙ্খলা মেনে সংগঠন পরিচালনা করছি। তিনি চান তার ইচ্ছেমতো আমরা কার্যক্রম পরিচালনা করবো। এসব বিষয়ে তিনি আমাদের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছেন। এসব বিষয় আমরা দায়িত্বশীল কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদককে অবহিত করেছি।
এ ব্যাপারে পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, কোন্দল গ্রুপিং থাকতে পারে আছে হয়তো। এগুলা নেতৃবৃন্দ ঠিক করবেন। আমাদের ধারণা নির্বাচনের হাওয়া শুরু হয়ে গেছে। মনোনয়ন ঘোষণা হয়ে যাবে। মনোনয়ন ঘোষণার পর এমন ভাবে জোয়াড় আসেবে যে, এগুলা আমার মতো কিছু ছোট লোক আছে যারা মানি না মানবও না সব জোয়াড়ে ভেসে যাবে।