প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা করে ৬ টুকরা, আসামীদের আরও তিন দিন রিমান্ড মঞ্জুর
স্টাফ রিপোর্টার:
জগন্নাথপুরে সৌদি প্রবাসীর স্ত্রী শাহনাজ পারভীন জ্যোৎস্নাকে (৩৫) গণধর্ষণ করে হত্যার পর মরদেহ ৬ টুকরো করে গুমের চেষ্টার অভিযোগে গ্রেফতারকৃতদের আবারও তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত৷
রোববার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে আসামী জিতেশ চন্দ্র গোপ ও তার দুই বন্ধু অনজিৎ গোপ এবং অসিত গোপের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
জগন্নাথপুর আদালতের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইশরাত জাহান এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
তিন আসামীর রিমান্ড মঞ্জুরের বিষয়টি বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেছেন জেলা আইনজীবী সমিতির অ্যাডভোকেট রুহুল তুহিন।
এর আগে তিন আসামীকে আদালতে হাজির করে প্রত্যেকের ৮ দিন করে রিমান্ড প্রার্থনা করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডির) উপ-পরিদর্শক লিটন দেওয়ান। রিমান্ড শুনানি শেষে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রত্যেক আসামীকে আরও তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
রিমান্ড মঞ্জুর হওয়ার পর তিন আসামীকে সিআইডি তাদের হেফাজতে নিয়েছে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি বুধবার রাতে জগন্নাথপুরের সৌদি প্রবাসীর স্ত্রী শাহনাজ পারভীন জ্যোৎস্নাকে (৩৫) কৌশলে ঘুমের ওষুধ খাওয়ানোর গভীর রাতে ফার্মেসির ভেতর এনার্জি ড্রিংকস খেয়ে তাকে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের বিষয়টি প্রকাশ করার কথা বলায় শ্বাসরোধে শাহনাজকে হত্যা করে ছুড়ি দিয়ে মরদেহ ৬ টুকরা করা হয়।
পরে মরদেহ গুমেরও পরিকল্পনা করে ধর্ষকরা। ঢাকা ও সুনামগঞ্জে বিশেষ অভিযান চালিয়ে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার শাহনাজ জ্যোস্না হত্যার মূল তিন আসামিকে গ্রেপ্তারের পর এসব তথ্য জানতে পারে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
উল্লেখ্য, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার জগন্নাথপুর পৌর পয়েন্টের ব্যারিস্টার মির্জা আব্দুল মতিন মার্কেটের তালাবদ্ধ অভি মেডিকেল হল থেকে শাহনাজ পারভীন জ্যোৎস্নার খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতের ভাই হেলালউদ্দিন বাদী হয়ে ১৭ ফেব্রুয়ারি জগন্নাথপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
শাহনাজ পারভীন জ্যোৎস্না ২০১৩ সাল থেকে পৌর শহরের নিজ মালিকানাধীন বাসায় ২ ছেলে ও ১ মেয়েকে নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন। তার স্বামী ছরকু মিয়া দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবে চাকরি করেন।
পরিবারের সব সদস্যদের ওষুধ ‘অভি মেডিকেল হল’ নামের ফার্মেসি থেকে কেনার সুবাদে জিতেশের সঙ্গে তার সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। শাহনাজ পারভীন কিছুদিন ধরে বেশ কিছু গোপনীয় শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। এ সমস্যার সমাধানে সুপরামর্শের জন্য গত বুধবার বিকালে জিতেশের ফার্মেসিতে গেলে ফার্মেসির ভিতরে প্রাথমিক চিকিৎসা কক্ষে তাকে বসিয়ে রাখা হয়।
ক্রেতাদের ভিড় কমলে তার সঙ্গে কথা বলে সমস্যা সমাধানের জন্য সঠিক ওষুধ তাকে দেওয়া হবে বলে সময়ক্ষেপণ করে। পরে ঘুমের ঔষধ খাওয়িয়ে জিতেশ তার বন্ধুরা জ্যোস্নাকে ধর্ষণ করে।