বিকাল ৩:৪৯,   শনিবার,   ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,   ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,   ১৮ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

ফসল রক্ষা বাঁধে দুর্নীতি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় সাংবাদিককে প্রাণনাশের হুমকি

স্টাফ রিপোর্টার:
হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ নিয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশ করায় দেশের বেসরকারি স্যাসেলাইট টেলিভিশন আরটিভি’র সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি সাংবাদিক শহীদনূর আহমেদকে প্রাণ নাশের হুমকি দিয়েছেন যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতারা।
মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে এ ঘটনায় নিরাপত্তা চেয়ে সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন ভুক্তভোগী ঐ সাংবাদিক।

জানা যায়, বেশ কিছুদিন সুনামগঞ্জের বিভিন্ন হাওরে বাঁধের কাজের অনিয়মের ফলে ফসলহানির ঘটনায় একের পর বাঁধের অনিয়ম দুর্নীতি নিয়ে সংবাদ প্রচার করেন আরটিভির সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি শহীদনূর আহমেদ।
গতকাল সোমবার রাতে হঠাৎ তার ফোনে কল আসে শান্তিগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাইম আহমেদের। এ সময় সে হাওরের দুর্নীতিতে ছাত্রলীগকে কেন জড়িত করা হয় সেটি জানতে চেয়ে সাংবাদিককে প্রাণে মারার হুমকি দেন পরবর্তীতে এ বিষয় নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করলে এর পরিণাম খুবই খারাপ বলেও জানান তিনি, পরদিন আজ মঙ্গলবার দুপুরে একই কারণে ফোন দিয়ে সাংবাদিককে অকথ্যভাষায় গালিগালাজ এবং সাংবাদিকের মা-বাবা থেকে শুরু করে পরিবারের সবাইকে দেখে নেয়ার হুমকি দেন শান্তিগঞ্জ যুবলীগের নেতা মতিউর রহমান মতি। এসময় মতি নিজেকে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নানের খাস লোক বলে পরিচয় দেয়।
এ ব্যাপারে ভোক্তভোগী সাংবাদিক শহীদনূর আহমেদ বলেন, হাওরের কি পরিমাণ অনিয়ম দুর্নীতি হয়েছে সেটির চিত্র তো সবার সামনেই, আমি গেল এক সপ্তাহ ধরে আমি বাঁধের বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতির সংবাদ তুলে ধরি, তবে গেল দুইদিন আগে আমি শান্তিগঞ্জ উপজেলায় গিয়ে হাওরে বাঁধের অনিয়মের কিছু চিত্র তুলে ধরার চেষ্টা করি এসময় ওই এলাকার কয়েকজন মানুষ বিষয়টি ভালোভাবে নেননি এর পর থেকেই আমাকে ফোন দিয়ে একটানা হুমকি দিয়েই যাচ্ছে, যার কারণে এখন আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি আমি থানায় এদের বিরুদ্ধে জিডি করেছি আশা করি আইনকর্তারা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখবেন।

এদিকে হাওরে বাঁধের অনিয়ম দুর্নীতির সংবাদের জেরে সাংবাদিক শহীদ নূরকে হত্যার হুমকি দেয়ায় ক্ষুব্দ সুনমাগঞ্জের গণমাধ্যমকর্মীরা। বিষয়টিকে ক্ষমতাশীল সরকার দলের লোকদের বাড়াবাড়ি বলেই মনে করছেন তারা।

সাংবাদিক মাছুম হেলাল বলেন, শহীদনূর হাওরে বাঁধের দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশ এবং অনিয়ম দুর্নীতি নিয়ে সোচ্ছার হওয়া একজন মানুষ, যেটি সুনামগঞ্জের কেউ অস্বীকার করতে পারবে না, কিন্তু সরকারি ক্ষমতার বলে যারা এমনভাবে সাংবাদিকদের হুমকি দিলেন তাদের আমরা উচিত শাস্তি চাই, এরা যেন আর কখনো এভাবে সাংবাদিকদের অসম্মান করতে না পারে।

আরেক সাংবাদিক মোসাইদ রাহাত বলেন, সহকর্মীকে হুমকির বিষয়য়ে জানতে চাইলে এদের ফোন দিলে তারা আমাকেও খারাপ ভাষায় গালিগালাজ করেছে আমার পরিবারকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করেছে, এটা সরকার দলের লোকদের বাড়াবাড়ি, তারা এখন চোখে কিছুই দেখেন না তাদের বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরলেই আমরা হয়ে যাই জারদ সন্তান, আমি তাদের আইনের মাধ্যমে কঠিন শাস্তির দাবি জানাই।

সুনামগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি দীপঙ্কর কান্তি দে ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, সত্যিই এটা মেনে নেয়া যায় না, আমরা এই ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে এ্যাকশন নিব, একজন সাংবাদিককে প্রাণ নাশের হুমকি দেয়া কোনভাবেই কাম্য নয়।

সুনামগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, আমরা এ ঘটনায় এটি জিডির কপি হাতে দিয়ে বিষয়টি অধিক গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।