সকাল ৯:০০,   শুক্রবার,   ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,   ৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,   ১৬ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

শক্তিশালি প্রার্থী না থাকায় সুবিধাজনক অবস্থানে পরিকল্পনা মন্ত্রী মান্নান

স্টাফ রিপোর্টার:
সুনামগঞ্জ- ৩ সংসদীয় আসন দুটি উপজেলা নিয়ে গঠিত (জগন্নাথপুর-শান্তিগঞ্জ) নিয়ে। এই আসনে স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকে প্রায়ই ছিল আওয়ামীলীগের দখলে এখান থেকে বার বার নির্বাচিত প্রয়াত জাতীয় নেতা সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী আব্দুস সামাদ আজাদ। তিনি মারা যাওয়ার পর ২০০৫ সালে এই আসন থেকে উপ-নির্বাচনের এমপি হন বিএনপির শরিক জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম থেকে শাহীনূর পাশা।
পরবর্তীতে ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী হয়ে নৌকা প্রতিকে বিজয়ী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন সাবেক অতিরিক্ত সচিব এম এম মান্নান। পরে তিনি ২০১৪ সালে অর্থ প্রতিমন্ত্রী দায়িত্ব পান। তারই কিছু পর পরিকল্পনা প্রতি মন্ত্রীর দায়িত্বও পান। একই সাথে পাঁচ বছর দুটি মন্ত্রণালয় চালিয়েছেন সাবেক এই আমলা।
এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৮ সালে আওয়ামীলীগ সরকার গঠন করার পর হন পরিকল্পনা মন্ত্রী।
তার আসনে এক মাত্র প্রতিদ্বন্দ্রী ছিলেন আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আব্দুস সামাদ আজাদের পুত্র আজিজুস সামাদ ডন। তিনি মনোনয়ন বঞ্চতি হয়ে দলের সিদ্বান্ত মেনে নির্বাচনে আসেন নি। এ দিকে বিরোধী দল বিএনপি নির্বাচনে না আসায় বলা যায় পরিকল্পনা মন্ত্রীর আসনে মাঠ প্রায় ফাঁকা।
দলের সিদ্বান্ত অমান্য করে নির্বাচনে আসেন এই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সদ্য সাবেক কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি শাহীনূর পাশা চৌধুরী। নিজের দল ছেড়ে তিনি তৃণমূল বিএনপিতে যোগ দিয়ে নির্বাচন প্রার্থী হয়েছেন।
দল থেকে তিনিও পদত্যাগ করেছেন একই সাথে দলও তার পদ স্থগিত করেছে। ভোটের মাঠে তিনি তেমন প্রভাব ফেলতে পারবেন না বলে মনে করছেন অনেক সাধারণ ভোটার। তিনি নতুন প্রজন্মের ভোটারদের কাছে প্রায় অপরিচিত মুখ। কারণ তিনি বিগত সময়ে এলাকায় আসতেন শুধু নির্বাচনকালীন সময়ে। এবারও তার একই অবস্থা।
এম এ মান্নান এই আসন থেকে ২০০৮ থেকে পর পর তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি এবার তার শেষ নির্বাচন বলে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ভোট চাচ্ছেন।
এম এ মান্নান মন্ত্রী হওয়ার ফলে বিগত ১০ বছর বিভিন্ন সময়ে সরকারি বেসরকারি যে কোনও ধরণের অনুষ্ঠানে যোগ দিতেন যার ফলে তার নির্বাচনী এলকায় তৈরী হয়েছে ব্যাপক পরিচিতি। আর এই সুযোগকেই মূলত কাজে লাগাচ্ছেন তিনি।
সুনামগঞ্জের অন্য চারটি আসনে ব্যাপক প্রতিদ্বন্দীতা হলেও এম এ মান্নান তার আসনে সহজ ভাবেই প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন।
এ দিকে সদ্য দল ত্যাগ করে তৃণমূল বিএনপিতে যোগ দেয়া সাবেক সাংসদ শাহিনূর পাশা চৌধুরীও ব্যাক্তিগত ভাবে চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছেন ভোট টানতে। তিনিও জয়ের আশায় বিরামহীন ভাবে ছুটছেন বিভিন্ন এলাকায়। চেষ্ঠা করছেন ভোটারদের মন জয় করতে।

শান্তিগঞ্জের স্থানীয় ভোটার জাহিদ মিয়া দেশ রুপান্তকে বলেন, আমাদের এখানে দুই জনের মধ্যেই প্রতিদ্বন্দীতা হবে। এম এ মান্নান ও শাহিনূর পাশার মধ্যে। তবে শাহিনূর পাশাকে অনেকেই চিনতে পারছে না। তাই এই প্রার্থী পড়েছেন বিপাকে। আমরা চাই উন্নয়ন। শান্তিতে থাকতে যাতে করে কোনও প্রকার ঝামেলায় পড়তে না হয়।
একই আসনের জগন্নাথপুর উপজেলার ভোটার রেজওয়ান মিয়া বলেন, আমাদের জগন্নাথপুর উপজেলা এখনও কিছুটা অবেহিলত রয়েছে। আমাদের প্রত্যাশা যিনি পূরণ করবেন তাকেই আমরা ভোট দিবও।
নির্বাচনের ব্যাপারে তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী শাহিনূর পাশা চৌধুরী বলেন, আমি নির্বাচন করছি আমার একক সিদ্বান্তে। যদি নির্বাচন সুষ্ঠ হয় আমি জয়ের ব্যাপারে আশাবাদি। আমার ব্যাক্তি ইমেজকে কাজে লাগিয়ে আমি ভোটারদের কাছে যাচ্ছি তারাও আমাকে ভোট দেয়ার আশ^াস দিচ্ছেন। আমাকে প্রচার প্রচারণ করতে বাধা দেয়া হচ্ছে। আমি খবর পেয়েছি শান্তিগঞ্জের সমবায় অফিসার মান্নান সাহেবের পক্ষে প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন। তিনি বিগত দশ বছর মন্ত্রী থাকার সুবিধা নিয়ে তার মতও করে প্রশাসনকে সাজিয়েছেন। প্রশাসন যদি নিরেপেক্ষ ভ‚মিকা পালন করে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদি।
পরিকল্পনা মন্ত্রী এম মান্নান বলেন, আমি আমার নির্বাচনী এলাকায় অনেক উন্নয়ন করেছি। কিছু কাজ অসমাপ্ত রয়েছে। সে গুলোই মূলত শেষ করার জন্য নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছি। আমার চাওয়া পাওয়ার কিছু নেই। গ্রামে যেখানেই যাচ্ছি ভোটারদের অভ‚তপূর্ব সাড়া পাচ্ছি। আশা কির ৭ জানুয়ারি আওয়ামলীগ সভাপতি শেখ হাসিনার পক্ষেই ফলাফল আসবে।
সুনামগঞ্জ-৩ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ২লক্ষ৯২হাজার ৪শ৪৭জন। তার মধ্যে পুরুষ ভোটার ১লক্ষ৪৫হাজার ৪শ ৮৬ জন। নারী ভোটার ১লক্ষ৪৬ হাজার ৯শ ৬১ জন।