সন্ধ্যা ৭:২৬,   মঙ্গলবার,   ১লা অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,   ১৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,   ২৮শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

সুনামগঞ্জে মজুদ বালু নিয়ে বিপাকে ব্যবসায়ীরা

স্টাফ রিপোর্টার :
সুনামগঞ্জের সদর উজেলার বিভিন্ন স্থানে বালু মজুদ করে বিপাকে পড়েছেন অনেক পাথর ও বালু ব্যবসায়ীরা। ২০১৯ সালের শীত মৌসুমে ব্যবসায়ীরা বিক্রি করার জন্য পুঁজি খাটিয়ে বালু মজুদ করেন।
কিন্তু ২০২০ সালের প্রথম দিকে কিছু বালু বিক্রি করতে পারলেও করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) কারণে আর বালু বিক্রি করা হয়নি।
পুরো বিশ্বের পাশাপাশি বাংলাদেশেও থাবা দেয় মরণঘাতি এই ভাইরাস।
স্থবির হয়ে পড়ে সব কিছু। ধীরে ধীরে অন্য দেশের মতো বাংলাদেশের মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলা লকডাউনের মধ্য দিয়ে জোরালোভাবে শুরু হয় করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ।
সুনামগঞ্জের বালুর ক্রেতা মূলত ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলার লোকজন। করোনা ভাইরাসের কারণে সব কিছু বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিল্ডিংসহ স্থাপনার কাজ বন্ধ হয়ে যায়।
যে কারণে বালু বিক্রি করতে পারেননি সুনামগঞ্জের ব্যবসায়ীরা। এ জন্য মজুদ থেকে যায় লক্ষ লক্ষ ফিট বালু।
বর্তমানে জেলার কোনো বালু মহাল (কোয়ারি) ইজারা না দেওয়ায় বালু উত্তোলন ও বিক্রি বন্ধ রয়েছে। আর এ জন্য যাতে অবৈধভাবে বালু কেউ উত্তোলন করতে না পারে সেজন্য কঠোরভাবে তদারকি করছে প্রশাসন।
এদিকে সুরমা নদীর শাখা নদী চলতি নদীর মুখে বসানো হয়েছে পুলিশ চেকপোস্ট। অবৈধভাবে কেউ বালু উত্তোলন করে বলগেট নিয়ে যেতে চাইলে পুলিশ আটক করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
বর্তমানে এ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন গত বছর মজুদকৃত বালু ব্যবসায়ীরা। তারা বালু বিক্রি করতে চাইলে পড়তে হয় পুলিশি হয়রানির মধ্যে। বলগেট ভর্তি পুরাতন বালু নিয়ে বের হতে গেলে পুলিশকে পুরাতন বালু কাগজ দেখালেও তারা বুঝতে চান না। অনেক সময় আটক করে নিয়ে যাওয়া হয় বলগেট ভর্তি বালু।
ব্যবসায়ীদের দাবি তাদের যেন মজুদকৃত পুরাতন বালু বিক্রি করার সুযোগ দেওয়া হয়। আর কেউ যদি নতুন করে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করতে চান তাদের যেন শাস্তির আওতায় আনা হয়।


ব্যবসায়ীরা জানান, করোনার কারণে বালু বিক্রি করতে না পারায় তারা লোকসানের মুখে আছেন। বর্তমানে বালুর দাম নিম্নমুখী, কারণ করোনার জন্য স্থাপনা নির্মাণ হচ্ছে না।
ব্যবসায়ী মনির হোসেন বলেন, গত বছর কেনা বালু এখন পর্যন্ত বিক্রি করতে পারিনি। করোনার কারণে সব বন্ধ হওয়ার ফলে স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ ছিল। এখন আবার বালু বিক্রি শুরু হয়েছে কিন্তু বর্তমানে সুনামগঞ্জে কোনো বালু মহাল ইজারা দেওয়া হয় নাই। তাই নতুন করে বালু উত্তোলন বন্ধ রয়েছে। কিন্তু আমরা যারা পুরাতন বালু বিক্রি করতে চাচ্ছি তাদের বাধার সম্মূখীন হতে হচ্ছে। আমরা চাই যাদের পুরাতন বালু মজুদ রয়েছে এবং বৈধ কাগজপত্র আছে তাদের যেন বালু বিক্রি করতে গিয়ে কোনো প্রকার হয়রানির শিকার হতে না হয়।


সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।
সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বলেন, পুরাতন বালু বিক্রিতে কোনো প্রকার নিষেধ নেই। তবে বৈধ কাগজ থাকতে হবে। কিন্তু কেউ যদি বালু উত্তোলন করে বিক্রি করতে চায় তা হলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।