স্মরণসভা: বজলুল মজিদ চৌধুরী আলোকিত মানুষ ছিলেন
স্টাফ রিপোর্টার:
তিনি একজন প্রগতিশীল, অসাম্প্রদায়িক আলোকিত মানুষ ছিলেন। নিজে মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। পরে মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের পরিবারের কল্যাণে জীবনভর কাজ করে গেছেন। তরুণ প্রজন্মের মধ্যে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছড়িয়ে দিতেন। স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছেন। মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের শিক্ষাবৃত্তির ব্যবস্থা করেছেন। তাঁর লেখা ‘রক্তাক্ত ৭১ সুনামগঞ্জ’ সুনামগঞ্জের মুক্তিযুদ্ধের অনন্য দলিল।
সুনামগঞ্জের বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিশিষ্ট আইনজীবী, লেখক-গবেষক বজলুল মজিদ চৌধুরীর প্রথম মৃত্যু বার্ষিকীর স্মরণসভায় তাঁকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বক্তারা এসব কথা বলেন।
বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে শহরের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা জগৎজ্যোতি পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা বজলুল মজিদ চৌধুরী স্মৃতি পরিষদ’ এই স্মরণসভার আয়োজন করে।
সভার শুরুতেই বজলুল মজিদ চৌধুরীর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে তাঁর জীবন ও কর্ম নিয়ে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘ বীরত্ব ভরা বীরের জীবন’ প্রদর্শিত হয়।
এরপর আয়োজক সংগঠনের আহবায়ক সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ পরিমল কান্তি দের সভাপতিত্বে স্মরণসভায় স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের সদস্যসচিব আইনুল ইসলাম। স্মরণসভা আরও বক্তব্য দেন সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নাদের বখত, সুনামগঞ্জের প্রবীণ আইনজীবী ও লেখক হোসেন তওফিক চৌধুরী, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি হুমায়ুন মঞ্জুর চৌধুরী ও শহীদুজ্জামান চৌধুরী, বর্তমান সভাপতি রোকেস লেইছ, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাকিম, সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ নীলিমা চন্দ, উপাধ্যক্ষ রজত কান্তি সোম, জেলা রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান পীর, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হায়দার চৌধুরী, জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি মো. মাসুক আলম, জেলা মহিলা পরিষদের সভাপতি গৌরি ভট্টাচার্য, জেলা মহিলাকল্যাণ কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক দিলারা বেগম,সুনামগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি পঙ্কজ কান্তি দে, সমাজকর্মী আশরাফ হোসেন, সাংবাদিক উজ্জ্বল মেহেদী ও মুক্তাদির আহমদ, প্রয়াত বজলুল মজিদ চৌধুরীর মেয়ে সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী সারাফ ফারহিন চৌধুরী প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জেলা উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম।
বক্তারা আরও বলেন, বজলুল মজিদ চৌধুরী তাঁর প্রতিষ্ঠিত ‘সুনামগঞ্জ মুক্তিযুদ্ধ চর্চা ও গবেষণা কেন্দ্র’র মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছড়িয়ে দিতেন। তাঁর ব্যক্তিত্ব, সাহস এবং সততান কারণে তিনি সব মহলে গ্রহণযোগ্য ছিলেন। বিশেষ করে তাঁর নেতৃত্বে সুনামগঞ্জে ‘হাওর বাঁচাও আন্দোলন’ সংগঠন গত কয়েক বছন ধরে দেশব্যাপী পরিচিতি লাভ করেছে। কৃষকদের পক্ষে সোচ্চার এই সংগঠনেরস আমৃতু সভাপতি ছিলেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধা অন্তপ্রাণ এই মানুষটি তাঁর কর্মগুণেই মানুষের মাঝে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।