রাত ৩:৩৫,   রবিবার,   ২৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,   ১৩ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,   ২৫শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

ধর্মপাশায় পিআইসি না পেয়ে কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ

ধর্মপাশা প্রতিনিধি:
ধর্মপাশায় কৃষকের কাছে সার বিক্রি ও প্রকল্পের কাজ না পাওয়াকে কেন্দ্র করে এক সার ডিলারসহ স্থানীয় কয়েকজনের বিরুদ্ধে কাইল্যানী হাওরের ২৪নং প্রকল্পের ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণ ও মেরামত কাজে বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বাঁধের কাজে ব্যবহৃত মাটি খনন যন্ত্রের (এক্সকেভ্যাটর মেশিন) গুরুত্বপূর্ণ অংশ বিনষ্ট করাসহ চালকের মোবাইল ফোন ও ডিজেল চুরি হয়েছে বলেও রয়েছে অভিযোগ। এ প্রকল্পের লোকজনের বিরুদ্ধে বাঁধের কাছ থেকে মাটি উত্তোলন, ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি থেকে অবৈধভাবে মাটি উত্তোলনসহ ফসলি জমির ওপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে ফসল বিনষ্ট করার অভিযোগ করে স্থানীয় লোকজন। তাই গত বৃহস্পতিবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পিআইসির সদস্য ও অভিযোগকারীদের তাঁর কার্যালয়ে ডাকেন এবং এ সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন। তবুও যে কোনো সময় অভিযোগকারীরা বাঁধের কাজে বাধা দিতে পারে বলে শঙ্কায় আছেন।
শুক্রবার দুপুরে ওই প্রকল্পের সভাপতি মো. সরোয়ারদ্রী তালুকদার উপজেলার জয়শ্রী ইউনিয়নের সানবাড়ি গ্রামে সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার বাখরপুর গ্রামের কয়েকজন কৃষক স্থানীয় সার ডিলার কলিঙ্গরাজ চৌধুরী কাছ থেকে সার নিতে গেলে তাদের (কৃষক) সার দেওয়া হয়নি। বিষয়টি নিয়ে সরোয়ারদ্রীর সাথে কলিঙ্গরাজের কথা হয়। এরই জেরে কলিঙ্গরাজ ও সরোয়ারদর্ীর মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। গত বুধবার সকাল ৮টার দিকে কলিঙ্গরাজের ধনিয়া ক্ষেতের ওপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে ক্ষেত বিনষ্ট করা হচ্ছে এমন অভিযোগে সানবাড়ি গ্রামের পরিমল মজুমদার এবং কলিঙ্গরাজের ভাই সম্রাট চৌধুরী ও কমরেড চৌধুরী সরোয়ারদ্রীর প্রকল্প এলাকায় গিয়ে প্রকল্পের কাজ বন্ধ করে দেন। এ সময় সরোয়ারদ্রীর কাছে পরিমল ও সম্রাট দেড় লাখ টাকা দাবি করেন। যদি টাকা না দেওয়া হয় তাহলে কাজ করতে দেওয়া হবে না বলেও হুমকি দেয় তারা। ফলে সকাল ৮ থেকে বিকেল তিনটা পর্যন্ত কাজ বন্ধ ছিল। বৃহস্পতিবার সারাদিন কাজ বন্ধ ছিল বলে দাবি প্রকল্প সভাপতির।
মো. সরোয়ারদ্রী তালুকদার বলেন,ধনিয়া ক্ষেতের মালিক স্বরসতিপুর গ্রামের মাও. আব্দুস সালাম। ধনিয়া ক্ষেতের কোনো ক্ষতি করা হয়নি। যে জমি থেকে মাটি উত্তোলন করা হয়েছে তা ওই জমির মালিকের অনুরোধেরই করা হয়েছে। তবে তা বাঁধের কাছ থেকে নয় বরং কাবিটা নীতিমালা মেনেই করা হয়েছে। এ নিয়ে প্রকল্পের লোকজনের বিরুদ্ধ একটি জাতীয় দৈনিকে মিথ্যা সংবাদ প্রচারিত হয়েছে। আমি তার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। পরিমল একই প্রকল্পে গেল বছর কাজ করেছিলেন। প্রকল্পের কাজে গাফিলতির কারণে ওই বছর পরিমলকে হাজতে পাঠিয়েছিলেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ বছর পরিমল ও সম্রাট প্রকল্পের কাজ পাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। প্রকল্পের কাজ না পেয়ে তারা এমনটি করছে।

পরিমল মজুমদার এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,এসব সম্পূর্ণ অবাস্তব ও অবান্তর। এদিকে কোনো টাকা দাবি করেননি উল্লেখ করে সম্রাট চৌধুরী বলেন,কৃষকেরা কাজে বাধা দিয়েছে। আমি ওইদিন সুনামগঞ্জ ছিলাম। ইউএনও সাহেব আমাকে বৃহস্পতিবার ডাকিয়েছিলেন তাই ইউএনও কার্যালয়ে গিয়েছিলাম।
কলিঙ্গরাজ চৌধুরী বলেন,সরোয়ারদ্রীর সাথে কোনো দ্বন্দ্ব হয়নি আর সার না দেওয়ার বিষয়টি সঠিক নয়। উপজেলা কাবিটা প্রকল্প বাস্তবায়ন ও মনিটরিং কমিটির সভাপতি ইউএনও মো. মুনতাসির হাসান বলেন,কেউ সরকারি কাজে বাধা দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সেই সাথে এ সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।