সকাল ১১:২৩,   বুধবার,   ২৫শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,   ১০ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,   ২১শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

ঈদ আনন্দে নতুন টাকা

নিউজসুনামগঞ্জ ডেস্ক:
করোনার মধ্যেও পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংক বাজারে ১৪ হাজার কোটি টাকার নতুন নোট বাজারে ছেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের শাখায় নতুন টাকা পাওয়া যাচ্ছে। ঈদ উপলক্ষে নতুন জামা, পাঞ্জাবি আর জুতার পাশাপাশি সালামি হিসেবে নতুন টাকা পেলে শিশুদের আনন্দ আর ধরে না।
শুধু ছোটরা নয়, নতুন কড়কড়ে নোট বড়দেরও আনন্দ দেয়। এজন্য ঈদ এলেই কদর বাড়ে টাকার নতুন নোটের। অনেকে ফিতরা ও জাকাত হিসেবে চকচকে নতুন নোট দেন। ঈদে নতুন নোট সরবরাহ করতে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতি বছরই ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়। এবারও ব্যতিক্রম হয়নি।
করোনা মহামারির মধ্যেও পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বাজারে ১৪ হাজার কোটি টাকার নতুন নোট ছাড়া হয়েছে। ঈদে কেনাকাটা করতে গ্রাহকদের বাড়তি চাহিদার কথা বিবেচনায় নিয়ে এই নোট বাজারে ছেড়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, প্রতি বছর ঈদে নতুন নোট ছাড়া হয়। চাহিদা-সরবরাহ নীতি অনুসরণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক সারা বছর বাজারে নোট সরবরাহ করে। তবে ঈদের আগে নোটের চাহিদা বেশি থাকে। সেই বিবেচনায় ঈদ উপলক্ষে ১৪ হাজার কোটি টাকার নতুন নোট বাজারে ছাড়া হয়েছে। নতুন নোটের মধ্যে রয়েছে ১০, ২০, ৫০, ১০০, ২০০ ও ৫০০ টাকার।
বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের শাখায় নতুন টাকা পাওয়া যাচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যাংকের কাউন্টারে নতুন টাকার জন্য দীর্ঘ লাইনে দাঁড়াচ্ছেন অনেকে। সমমান টাকা দিয়ে বিনিময় করতে পারবেন গ্রাহক।
নতুন টাকার চাহিদা বাড়ায় রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে অস্থায়ী নতুন টাকা বিকিকিনির দোকান। নতুন নোটের পসরা সাজিয়ে বিক্রেতারা বসে আছেন। ক্রেতাদের ভিড়ও চোখে পড়ার মতো।
ব্যাংকের লাইনে দাঁড়িয়ে যারা সময় নষ্ট করতে চান না, অথবা অফিস সময়ের পরে ঝামেলামুক্তভাবে নতুন টাকা নিতে চান, মূলত তারাই এসব অস্থায়ী দোকানের ক্রেতা। তবে সেক্ষেত্রে বান্ডিল (১০০টি নোট) প্রতি নোটভেদে ২০ থেকে ৫০ টাকা বেশি দিতে হচ্ছে। অস্থায়ী বাজারের ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদে ৫, ১০, ২০ ও ৫০ টাকার নতুন নোটের চাহিদা বেশি। এ ছাড়া এক ও দুই টাকার কয়েন এবং ১০০, ২০০, ৫০০ ও ১ হাজার টাকার নোটের চাহিদাও বেশ।

ব্যাংকে ভিড়
ঈদ যতই এগিয়ে আসছে, ব্যাংকের কাউন্টারে বাড়ছে দীর্ঘ লাইন। ব্যাংকগুলোর ক্যাশ কাউন্টারের সামনে লম্বা লাইন লক্ষ করা গে‌ছে। লেন‌দে‌নের পাশাপাশি সঞ্চয়পত্রের টাকা তুলছেন অনেকে। অতিরিক্ত গ্রাহকের চাপে ব্যাংকের ক্যাশ কাউন্টারের কর্মকর্তাদের হিমশিম অবস্থা।
ম‌তি‌ঝিল সোনালী ব্যাংকে দেখা গেছে গ্রাহকের লম্বা লাইন। নগদ টাকা তোলার চাপ বেশি। অনেকে সঞ্চয়পত্রের মুনাফা তুলছেন, কেউ কেউ আমানতে অর্থ জমা করছেন। আবার অনেকে বি‌ভিন্ন বিলও জমা দিচ্ছেন।
কর্মকর্তারা বলেন, অন্যান্য দিনের তুলনায় এখন প্রায় তিন গুণ লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে গ্রাহক টাকা উত্তোলন বে‌শি করেছেন। ঈদে লোকজন গ্রামে টাকা পাঠাবেন আবার অনেকে কর্মীদের বেতন-বোনাস দেবেন। সব মি‌লিয়ে ঈ‌দ উপলক্ষে ব্যবসায়িক ও নিজস্ব প্রয়োজনে টাকা তুলছেন। তবে নগদ টাকার কোনো ঘাটতি নেই। গ্রাহকের চাহিদামতো টাকা দেয়া হচ্ছে।’
অগ্রণী ব্যাংকের সার্ভার সমস্যা
অতিরিক্ত গ্রাহকের চাপে রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংকে সার্ভার সমস্যায় লেনদেন বিঘ্নিত হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার থেকেই এ ব্যাংকের সার্ভারে ঝামেলা হচ্ছে।
অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. শামসুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের সার্ভারটি অনেক পুরনো। এর আপগ্রেডেশন করতে যাচ্ছি। কিন্তু কোভিডের কারণে আমাদের ফরেন টেকনিশিয়ানরা আসতে পারছেন না। এ কারণে একটু সমস্যা হচ্ছে। দ্রুত ঠিক হয়ে যাবে।’ ব্যাংক খোলা ২ দিন এদিকে ঈদের আগে মঙ্গল ও বুধবার ব্যাংকের শেষ দুই কার্য‌দিবস। তবে ঈদের আগে তৈরি পোশাকশিল্পের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য এবং রপ্তানি বাণিজ্য অব্যাহত রাখতে ঢাকা মহানগরী, আশুলিয়া, টঙ্গী, গাজীপুর, সাভার, ভালুকা, নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামে অবস্থিত ব্যাংক শাখা ১০ মে এবং ১৩ মে (ঈদ সাপেক্ষে) খোলা রাখতে বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এদিকে, বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ নির্দেশনা অনুযায়ী, গত বৃহস্পতিবার থেকে সব ব্যাংকে লেনদেন সকাল ১০টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত। ঈদের কারণে ব্যাংকে চাপ বাড়ায় ব্যাংকিং লেনদেনের সময় বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সরকারঘোষিত ‘সর্বাত্মক লকডাউন’ ১৬ মে পর্যন্ত বাড়ানোয় সীমিত আকারে ব্যাংক খোলা রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, এ সময়ে উপজেলা শহরের শাখা খোলা থাকবে রবি, মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার। আর সিটি করপোরেশন এলাকার দুই কিলোমিটারের মধ্যে একটি শাখা প্রতি কর্মদিবসে খোলা থাকছে।
সূত্র:নিউজবাংলা২৪.কম