ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে মানববন্ধনে একাই দাঁড়ালেন মা
স্টাফ রিপোর্টার:
জেলা ও দায়রা জজ আদালতে প্রবেশ পথে মানববন্ধনের একটি ব্যানার টানিয়ে ছেলে রাব্বি হত্যার বিচার চাইতে দেখা গেছে এক মাকে।
বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কোর্ট প্রাঙ্গণে একাই মানববন্ধন করেন নিহতের মা।
মানববন্ধনে দাঁড়ানো ওই নাম রুপিয়া বেগম, তিনি রাব্বির মা। রুপিয়া বেগমের বাড়ি সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার নোয়ারাই ইউনিয়নের পূর্ব নোয়ারাই গ্রামে। তাঁর একমাত্র ছেলে মেহেদী হাসান রাব্বি (২২) হত্যার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের দাবিতে আজ তিনি একাই এ মানববন্ধন করেছেন তিনি।
এসময় রুপিয়া বেগম বলেন, ২০১৯ সালে ২৩ জুলাই বিকেলে আমরার সিমেন্ট ফ্যাক্টরি এলাকার বাজারের একটি দোকানে বসে চা খাইতেছিলো আমার রাব্বি, ওই সময় লিয়াকত, তারেক আর সোহাগ আইয়া হঠাৎ করি আমার ছেলেরে পিছন থকি কুব দিসে আমার ছেলেটা ডরাইয়া দৌড় দিসে কিন্তু আমার পোয়াটারে তারা দৌড়াইয়া দৌড়াইয়া মারসে রামদা দি।
তিনি আরও বলেন, আমার ছেলে যখন আহত অবস্থায় পড়িয়া রইছে কেই হাত দিসে হসপিটাল লইয়া গেছে না আমি পুলিশরে কইছে তারা খালি আমারে দৌড়াইছে । পরে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাতে মারা যায় আমার যাদুবাছাইটা।
ঘটনার পর ২৬ জুলাই রুপিয়া বেগম বাদী হয়ে ১৭ জনের বিরুদ্ধে ছাতক থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এরপর পুলিশ বিভিন্ন সময়ে কয়েকজন আসামিকে গ্রেপ্তার করে। তবে আসামিদের কেউ কেউ উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন। বর্তমানে আসামিদের মধ্যে শুধু লিয়াকত আলী জেলে আছেন। এ ছাড়া একজন আসামি পলাতক। পুলিশ মামলার তদন্ত করে ১৭ আসামির মধ্যে ১২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে। অভিযোগপত্র থেকে বাদ পড়া আসামিদের নাম আবার যুক্ত করতে রুপিয়া বেগমের আইনজীবী আদালতে আবেদন করেছেন।
রুপিয়া বেগম বলেন, স্বামীর মৃত্যুর পর তিনি অনেক কষ্ট করে তাঁর ছেলে রাব্বিকে বড় করেছেন। দোকানের কর্মচারী হিসেবে কাজ করে রাব্বি সংসার চালাতেন। ছেলেকে হারিয়ে তিনি দিশাহারা হয়ে পড়েছেন। আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় তিনি ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন। এছাড়া মামলা নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করলে প্রানের মারা হুমকি দিয়ে হামলাও চালিয়ে আসামির লোকজন।
ঘটনার পর্যাযক্রমে তিনি আরও বলেন, আমি মুক্তিযোদ্ধার সন্তান আমাকে আসামিরা আমামরে খুব হুমকিদের আমি যখন তারা হাইকোর্ট থকি জামিন আনছিল ওই সময় তারা ঢাকা যাত্রাবাড়ি আমারে মারছে আমার পা এখনো ফুলা রইছে, আমার বাবা একটা ছোট মেয়ে আছে মেয়েটারে তারা মারি লাইতো হুমকি দিসে আমি আমার আর আমার ছোট মেয়েটার জানের নিরাপত্তা চাই। আমি চাই না আর কোন মা বুক ইলান খালি ওউক আমি সবগুলা ফাসি চাই।
এ মামলার আইনজীবী মল্লিক মো. মইন উদ্দিন বলেন, মামলার আইনি প্রক্রিয়া চলছে। অভিযোগপত্র থেকে বাদ পড়া আসামিদের আবার যুক্ত করতে আদালতে আবেদন করা হয়েছে। এ আবেদন শুনানির পর্যায়ে আছে।