রাত ১:২২,   শনিবার,   ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,   ৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,   ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

হিউম্যান ল্যাবে রোগীদের ইসিজি করছে “পিয়ন”

বিশেষ প্রতিনিধি:
ভাটির জেলা হিসেবে পরিচিত সুনামগঞ্জ। জেলায় উন্নত স¦াস্থ্য সেবা পাওয়ার আসায় সুনামগঞ্জ ২৫০শয্যা বিশিষ্ট্য সদর হাসপাতালে ছুটে আসেন সাধারণ মানুষ। তবে হাসপাতালে এসে কাক্সিক্ষত সেবা না পেয়ে ছুটে যান সুনামগঞ্জে ব্যাঙের ছাতার মত গজিয়ে উঠা ডায়াগনস্টিক সেন্টার গুলোতে।
ইতিমধ্যে সুনামগঞ্জের সকলের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে হিউম্যান ল্যাব নামের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার।
কারণ এই ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নামিদামি প্রায় ১২ থেকে ১৫ জন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার বসেন। তবে সম্প্রতি এই সেন্টারে ঘুরে চৌখ আটকায় ইসিজির রুমে। দেখা যায় এই ল্যাবের পিয়নের দায়িত্বে থাকা এক মহিলা ইসিজির নানা ধরণের যন্ত্র বুকে লাগিয়ে রোগীদের ইসিজি পরীক্ষা করছেন।


তার মধ্যে একজন সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার গৌরারং ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামের বাসিন্দা রাজু আহমেদ। শারীরিক সমস্যা এবং বুকে ব্যাথা নিয়ে এই মেডিসিন বিশেষজ্ঞ গৌতম রায়কে ডাক্তার দেখান। সেই ডাক্তার থাকে ইসিজি করার জন্য লিখে দেন। সেই ইসিজি করার জন্য গত ১০ নভেম্বর শুক্রবার সুনামগঞ্জ হিউম্যান ল্যাব নামে একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যান তিনি। সেখানে গিয়ে ২৫০ টাকা দিয়ে ইসিজি করার জন্য ১২ নাম্বার রুমে গেলে সেখানে গিয়ে তিনি টেকনোলজিস্টের জন্য অপেক্ষা করেন। কিন্তু ৫মিনিট অপেক্ষা করার পর টেকনোলজিস্টের জায়গায় ল্যাবের এক পিয়ন তার ইসিজি করছে দেখে তিনি হততম্ব হয়ে যান।


ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সেবা নিতে আসা ভুক্তভোগী রোগী রাজু আহমেদ নিউজসুনামগঞ্জডটকমকে বলেন, ডাক্তারের পর্রামশে ইসিজি করার জন্য হিউম্যান ল্যাব নামে একটি ডায়গনেস্টিক সেন্টারে এসেছিলাম। কিন্তু এখানে এসে অবাক। ল্যাবের কর্মচারী যখন দেখি আমার ইসিজি করছে। টেকনোলজিস্ট ছাড়া অধক্ষ লোক দিয়ে করানো হচ্ছে স্পর্শকাতর এ কাজ গুলো। এই ভাবে স্বাস্থ্য সেবা নামে লোক ঠকিয়ে ব্যবসা করা ঠিক না। এই দিকে স্বাস্থ্য বিভাগসহ দায়িত্বশীলদের নজর দেওয়া উচিৎ।


শুধু রাজু আহমেদ নয় উন্নত চিকিৎসা সেবা পাওয়ার আশায় এই রকম প্রতিদিন হাজারো রোগী এসে এই রকম স্বাস্থ্য সেবার নামে হয়রানির স্বীকার হচ্ছেন।
দোয়ারাবাজার উপজেলার বাসিন্দা এমরান হোসেন নিউজসুনামগঞ্জডটকমকে বলেন, সুনামগঞ্জ শহরের হিউম্যান ল্যাবে গিয়েছিলাম ইসিজি পরীক্ষা করার জন্য কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখি ল্যাবের কর্মচারী দিয়ে যেমন খুশি তেমন ভাবে ইসিজি করা হচ্ছে।
শান্তিগঞ্জের পাগলা বাজারের বাসিন্দা জুলেকা আক্তার নিউজসুনামগঞ্জ.কমকে বলেন, স্বাস্থ্যসেবার নামে হিউম্যান ল্যাবে ব্যবসা শুরু করেছে। ইসিজি করতে গিয়ে হতাশা জনক সেবা পেয়েছি। যাকে খুশি থাকে দিয়ে তারা ইসিজি পরীক্ষা করাচ্ছে।
হিউম্যান ল্যাবের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিক আহমদ নিউজসুনামগঞ্জডট.কমকে বলেন, ইসিজি করার জন্য টেকনিশিয়ান প্রয়োজন নেই। যারা আমাদের ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কাজ করে তাদেরকে ইসিজি করার জন্য ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকেই আমরাই প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি। তার জন্য আলাদা লোকের প্রয়োজন নেই।
সুনামগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. আহমদ হোসেন নিউজসুনামগঞ্জডট.কমকে বলেন, প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ছাড়া কেউ ইসিজি করতে পারবে না। আর ল্যাবের কর্মচারী কোনও ভাবেই ইসিজি করতে পারে না। বিষয়টি আমরা ক্ষতিয়ে দেখব।