রাত ১১:৪৩,   শুক্রবার,   ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,   ৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,   ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

শাপলার অপরুপ সৌন্দর্যে সেজেছে প্রকৃতি

তাহিরপুর প্রতিনিধি:

ভোর আলোর ফুটার সাথে সাথে পুরো বিলজুড়ে ফুটে উঠে শাপলা। সেই সাথে পাখির কিচিরমিচির শব্দে প্রকৃতি তার রূপের সঙ্গে নিজেই যেন বাদ্যযন্ত্রে সুরের ঝরনাধারা ছড়িয়ে দিয়েছে। যে সৌন্দর্য দেখে ইতিমধ্যে মায়ার ইন্দ্রজালে জড়িয়েছেন বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পর্যটকরা। বলছিলাম সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বিকি বিলের কথা।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়,ভোরের আলো ফুটার সাথে সাথে যেদিকে দুচোখ যায় দিগন্ত জুড়ে পানির ওপর ফুলে ফুলে সাজানো লালগালিচা। ডানে তাকালে চোখে পড়বে মেঘালয় পাহাড়। যেন প্রকৃতি তার সৌন্দর্যকে মেলে ধরেছে।


শাপলার এমন সমারোহ ভালো করে দিতে পারে যে কারো মন। শাপলা ফুলের এ লালরাজ্য দেখতে প্রতিদিন ভিড় করেন বিভিন্ন স্থান থেকে আসা দর্শনার্থী।
জানা যায়,তাহিরপুর উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়নের বিকি বিলটি কাশতাল গ্রামে অবস্থিত। হলহলিয়ার চক ও দীঘলবাঁক মৌজার প্রায় ১৪ দশমিক ৯৫ একর জায়গা নিয়ে বিকি বিলের অবস্থান। কাশতাল, বরোখাড়া ও আমবাড়ি গ্রাম বিকি বিলটিকে তিন দিক থেকে ঘিরে রেখেছে, যার পাশেই মেঘালয়ের সীমান্ত। কোনো রকম চাষাবাদ ছাড়াই ৩০বছর ধরে এ বিলে লাল শাপলা ফুলের বিপুল সমারোহ দেখা যায়। বছরের ছয় মাস এ বিলে পানি থাকে। তাই এ ছয় মাসই বিলে লাল শাপলার এ অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন দর্শনার্থীরা।

তবে পাহাড় আর হাওরের পাশাপাশি বিকি বিলের লাল শাপলার এমন সৌন্দর্য স্থানীয়দের পাশাপাশি মুগ্ধ করছে বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পর্যটকদেরও।
পাশাপাশি লাল শাপলার এই বিলটিকে ঘিরে কর্মসংস্থান বেড়েছে ওই অঞ্চলের খেটে খাওয়া মানুষদের।
ঘুরতে আসা পর্যটক ওয়াহিদ্দুজামান নিউজসুনামগঞ্জডটককে বলেন, অসাধারণ সৌন্দর এই লাল শাপলার বিলটি। চারদিকে লাল আর লাল। যে কেউ এই লাল শাপলার প্রেমে পড়বে।
ঘুরতে আসা পর্যটক আশরাফুল হক বলেন, রাত ৪ টার দিকে সুনামগঞ্জ থেকে রওনা দিয়ে এই লাল শাপলার বিলে এসেছি। ভোরের আলো ফুটতেই দেখি অসাধারণ এক দৃশ্য। এক দিকে পাহাড় তার উপরে মেঘ আনাগুনা আর নিচে লাল শাপলার মেলা। সত্যি আমি এই লাল গালিচার সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ।


স্থানীয় বাসিন্দা শরিফুল ইসলাম বলেন, এই লাল শাপলার বিলকে ঘিরে আমাদের কর্মসংস্থান বেড়েছে। প্রতিদিন এখানে পর্যটকরা আসলে আমরা সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তাদের নৌকায় নিয়ে ঘুরি করে।
তাহিরপুর উপজেলার পরিষদের চেয়ারম্যান করুণা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল নিউজসুনামগঞ্জডটকমকে বলেন, ইতিমধ্যে বিকি বিলের যে লাল শাপলা এটি সকলের নজর কেড়েছে। এই পর্যটন স্পটকে সরকারি ভাবে চেষ্টা করা হচ্ছে কি ভাবে দৃষ্টিনন্দন করা যায়।
সুনামগঞ্জের ১২ উপজেলার মধ্যে সব চেয়ে বেশি এই বিকি বিলে লাল শাপলা ফুটে। যা সূর্যোদয় থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত লাল শাপলার সৌন্দর্য দৃশ্যমান থাকে।