ছাতক সিমেন্ট কারখানা থেকে সরকার বছরে রাজস্ব পাবে ৮০ কোটি টাকা
বিশেষ প্রতিনিধি:
প্রায় ১৪শ ১৭ কোটি টাকা ব্যায়ে সুনামগঞ্জের ছাতক সিমেন্ট কারখানা আধুনিকায়নের ৮৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছ। কারখানাটি চালু হলে প্রতিদিন প্রায় ১ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন ক্লিংকার ও ৫০০ মেট্রিক টন সিমেন্ট উৎপাদন হবে। ফলে সরকারি এই প্রতিষ্ঠানটি চালু হলে দেশে যেমন সিমেন্টের দাম নিয়ন্ত্রণে থাকবে তেমনি দেড় যুগ ধরে লোকসানে থাকা প্রতিষ্ঠানটি লাভজনক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সুনামগঞ্জ থেকে প্রায় ৪৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত শিল্পনগরী ছাতক উপজেলা। এই উপজেলার সুরমা নদীর পাড়ে দেশের একমাত্র সরকারি ছাতক সিমেন্ট কারখানাকে ওয়েট প্রসেস থেকে ড্রাই প্রসেসে রূপান্তরের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। নতুন রোপওয়ে, ক্রাশার, প্রি-হিটার, ভার্টিক্যাল রোলার মিল ও সিমেন্ট মিল, ক্লিংকার সাইলো, প্যাকিং প্ল্যান্ট, ১০ মেগাওয়াট পাওয়ার প্ল্যান্ট, ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট নির্মাণের কাজ ৮৫ ভাগ শেষ হয়েছ। জানা যায়, ৮৫ বছরের পুরনো এ কারখানাটি গত দেড় যুগ ধরে লোকসানের মুখে পড়ে বন্ধ হয়ে যায়। সর্বশেষ ২০০৩-০৪ অর্থ বছরে সর্বোচ্চ ১ লাখ ৮০ হাজার ৮২০ মেট্রিক টন সিমেন্ট উৎপাদিত হয় ছাতক সিমেন্ট কারখানায়। এরপর থেকেই কমতে শুরু করে কারখানাটির উৎপাদন। এর দৈনিক উৎপাদনক্ষমতা ৫০০ মেট্রিক টন থেকে ২০০ মেট্রিক টনে নেমে আসে। ফলে ২০১১-১২ অর্থ বছর কারখানাকে লোকসান গুনতে হয়েছে ১০ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। ক্রমান্বয়ে ২০১২-১৩ অর্থ বছরে ১৬ কোটি ৩১ লাখ টাকা ও ২০১৩-১৪ অর্থ বছরে ২১ কোটি টাকা। পরে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে সরকার এই সিমেন্ট কারখানাকে আধুনিকায়নের জন্য ৮শ ৯২ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প হাতে নিয়ে এটিকে চীনের নাং জি সি হোপ ড্রাই প্রসেসে রূপান্তরের কাজ শুরু করে।
পরে জিনিসপত্রের দাম বাড়ায় এই প্রকল্পের ব্যায় বাড়িয়ে দিয়ে ১৪শ ১৭ কোটি টাকা ধরা হয়। নতুন এই প্ল্যান্ট চালু হলে প্রতিদিন দেড় হাজার টন ক্লিংকার উৎপাদন করে দেশের বিভিন্ন কোম্পানিতে বিক্রি করা হবে যার বাজার মূল্য ৮০ লাখ এবং ৫০০ মেট্রিক টন সিমেন্ট উৎপাদন করে দেশের বিভিন্ন জায়গায় রপ্তানি করা হবে যার বাজার মূল ৫০ লাখ টাকা। এবং বছরে সাড়ে ৪ লাখ মেট্রিক টন ক্লিংকার ও দেড় লাখ টন সিমেন্ট উৎপাদিত হবে। যা থেকে সরকার বছরে রাজস্ব পাবে ৮০ কোটি টাকা।স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এই কারখানাটি চালু হলে এখানের প্রায় লক্ষাধিক মানুষের কর্মস্থানের সুযোগ হবে পাশাপাশি অর্থনেতিক দিক দিয়ে যেমন এই অঞ্চল চাঙ্গা হবে।নতুন ড্রাই প্রসেস প্রজেক্টের ডিপিডি আব্দুর রহমান বাদশাহ বলেন, কারখানাটি চালু হলে লাভজনক ভাবে চলবে। পরিবেশ বান্ধব হবে। পরিবেশ দূষণ হবে না। তিনি আরও বলেন, ২০২৫ সালের জুন মাসে এই কারখানাটি চালু করা হলে এখানে প্রায় লক্ষাধিক মানুষের কর্মস্থান হবে পাশাপাশি চাঙ্গা হবে এখানকার অর্থনেতিও।