সকাল ১০:৩১,   মঙ্গলবার,   ৮ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,   ২৩শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,   ৪ঠা রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

দক্ষিণ সুনামগঞ্জে খড় সংগ্রহের উৎসব

নোহান আরেফিন নেওয়াজ :
হাওরের রাজধানী খ্যাত সুনামগঞ্জ জেলার দক্ষিণ সুনামগঞ্জের বিভিন্ন হাওরে ধানকাটা প্রায় শেষের দিকে। মাড়াইকৃত ধান শুকানোর পাশাপাশি কৃষকরা এখন ব্যস্ত সময় পাড় করছেন গরুর খাদ্য সংগ্রহে। মাড়াইকৃত কাঁচা ধান গাছের অংশবিশেষ (খড়) শুকিয়ে বাড়ির আঙ্গিনায় খড়ের গাদা বা ভোলা দিয়ে জমা করে রাখছেন কৃষকরা। হাওর অধ্যুষিত জেলার দক্ষিণ সুনামগঞ্জের বেশির ভাগ অঞ্চল বর্ষায় পানিতে টুইটুম্বুর হয়ে যায়। ফলে বর্ষায় দেখা দেয় গো-খ্যাদ্যের অভাব। আর এ অভাব পুরনেই বিকল্প হিসেবে শুকনো খড় বাড়িতে তুলে রাখেন কৃষকরা।
শুক্রবার দক্ষিণ সুনামগঞ্জের বিভিন্ন হাওর ঘুরে দেখা যায় কৃষকদের কর্মযজ্ঞ। রমজান মাসের প্রচণ্ড তাপদাহের মধ্যেও হাওরের উঁচু স্থান, আঞ্চলিক মহাসড়ক ও গ্রামীণ সড়কে ধান গাছের কাঁচা খড় শুকাচ্ছেন কৃষকরা। দিনভর খড়ের এপিঠ-ওপিঠ শুকিয়ে কেউ কেউ হাওরেই খড়ের গাদা দিয়ে রাখছেন। যা একসময় বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। আবার অনেককেই দেখা যায় বাড়ির আঙ্গিনায় উৎসবের আমেজে বড় বড় খড়ের গাদা দিয়ে রাখতে। কেউ আবার এসব খড় টিন সেটের ছাউনি বানিয়ে রাখছেন।
কৃষকরা জানিয়েছেন, হাওরে ধান কাটার পর পরই খড় শুকানো নিয়ে কৃষকরা ব্যস্ত থাকেন। খড় শুকানোর মধ্য দিয়ে বৈশাখ মৌসুমের ইতি টানেন কৃষকরা। ধান কাটার পর পর উৎসবের ন্যায় আনন্দ-উল্লাস করে খড় বাড়িতে তুলেন কৃষকরা। শুকানো খড় ঘরে তুলতে পারলে বর্ষায় গো খাদ্য নিয়ে চিন্তা করতে হয় না কৃষকদের। অন্যথায় বর্ষায় গো খাদ্য নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হয় কৃষকদের। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের পর গো-খাদ্য সংগ্রহ করতে পারায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন হাওর পাড়ের কৃষকরা।
উপজেলার বরকুল হাওর পাড়ের কৃষক আ. কালাম বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধীরস্থীরভাবে ধান শুকিয়ে ঘরে তুলেছি। ধান ঘরে তুললেই বৈশাখ মৌসুমের শেষ হয় না। এখন খড় শুকিয়ে সংগ্রহ করছি। বর্ষায় গরুর খাদ্যের সংকট দূর করতে খড়ের ওপর নির্ভর করতে হয়। আশা করছি ভালোভাবেই খড়ও সংগ্রহ করতে পারবো।
দেখার হাওর পাড়ের কৃষক মইনুল হক বলেন, আমার ৪ টি গরু রয়েছে। বর্ষাকালে খড়ই গরুর খাদ্যের ভরসা। কয়েকদিন টানা রোদ থাকায় খড় শুকাতে পেরেছি। এখন প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় উল্লাস করে বাড়ীর আঙ্গিনায় খড়ের ভোলা দিতে পারলেই স্বস্তি পাই। এইদিন প্রতিবেশীদের ইফতার ভোজন করাবেন বলে জানান তিনি।