ধর্মপাশায় চুরির অপবাদ সইতে না পেরে যুবকের আত্মহত্যা!
ধর্মপাশা প্রতিনিধি :
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় স্যালু মেশিন চুরির অপবাদ ও সালিশে জরিমানার টাকা পরিশোধ করতে না পেরে রিপন মিয়া ওরফে কালা মিয়া (২৪) নামের এক যুবক আত্মহত্যা করেছে। সে উপজেলার জয়শ্রী ইউনিয়নের ঘিরইল গ্রামের বাসিন্দা ফজল হকের ছেলে। শনিবার দুপুরে পুলিশ ওই যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, কালা মিয়া জয়শ্রী ইউনিয়নের বানারশিপুর গ্রামের আইয়ূব আলীর বাড়িতে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করতো। কিছুদিন আগে একই গ্রামের লিটন মিয়া নামের এক বক্তির একটি স্যালু মেশিন চুরি হয়। গত শুক্রবার বিকেলে সানবাড়ি বাজারে খালেক মিয়ার দোকানে এক সালিশে ওই স্যালু মেশিন চুরির অপরাধে অভিযুক্ত করে কালা মিয়াকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। পরে তার গলায় জুতার মালা দিয়ে বাজারে ঘুরানো হয়। সালিশ পরিচালনা করেন স্থানীয় ইউপি সদস্য আয়নাল হক, বানারশিপুর গ্রামের আইয়ূব আলী, শুক্কুর আলী, হিরু মিয়াসহ প্রমুখ। সালিশ শেষে কালা মিয়া জরিমানার টাকা পরিশোধ করতে না পারায় তাকে আটকে রাখা হয়। পরে শনিবার সকালে স্থানীয় লুরির বিলের কান্দার একটি গাছে কালা মিয়ার লাশ ঝুলতে দেখে এলাকাবাসী। খবর পেয়ে শনিবার দুপুরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
ছেলের মৃত্যুতে কালা মিয়ার বাবা কথা বলার অবস্থায় নেই। তবে কালা মিয়ার এক চাচা জয়শ্রী ইউনিয়নের বরই গ্রামের বাসিন্দা আব্দুস ছাত্তার আজাদ বলেন, ‘সালিশ শেষে কালা মিয়াকে আটকে রাখা হয়। শনিবার সকালে তার লাশ গাছে ঝুলতে দেখে এলাকাবাসী। তার গায়ে বিভিন্ন আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। যদি হত্যা করা হয়ে থাকে তাহলে উপযুক্ত বিচার চাই।’
সালিশ পরিচালনাকারী ইউপি সদস্য আয়নাল হকের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি এবং অন্য কারও সাথে এ ব্যাপারে কোনোভাবেই যোগাযোগ করা যায়নি।
ধর্মপাশা থানার এসআই হাবিবুর রহমান বলেন, ‘সালিশে কালা মিয়াকে জুতার মালা দিয়ে বাজারে ঘুরিয়েছে বলে শুনেছি। চুরির অপবাদ সইতে না পেরে আত্মহত্যা করে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’