সকাল ১০:০৬,   সোমবার,   ২০শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,   ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,   ১১ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

নতুন ফসল ঘরে তুলে খুশি কৃষকরা

বিশেষ প্রতিনিধি 

অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর সুনামগঞ্জে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ধানের বাজারদরও ভালো। কাঙ্ক্ষিত দরে উৎপাদিত ফসল বিক্রয় করতে পেরে খুশি কৃষকরা । সেই সাথে নতুন ফসল ঘরে তুলে হেমন্তের নবান্ন উৎসবে মেতে উঠেন হাওরবাসী।

 সরজমিনে গিয়ে যায়, সুনামগঞ্জের হাওর এলাকায় চলছে আমন ধান কাটার উৎসব। কোয়াশার সকাল থেকে শুরু করে প্রখর রোদের মাঝে হাওরের কৃষক ধান কেটে ব্যস্থ সময় পার করছেন। সেই সাথে  হাওর পাড়ের কৃষাণীদেরও বেড়েছে দারুণ ব্যস্থতা।  এই ব্যস্থতা মাড়াই ও সংরক্ষণের।  কেউ ধান ভাঙছেন কেউ শুকাচ্ছেন কেউবা ধান মাড়াই করছেন। ফলে  সোনালী ধান কেটে ঘরে তুলতে পেরে খুশি হাওর পাড়ের কৃষক।

এই যেমন সুনামগঞ্জের জাহাঙ্গীর নগর ইউনিয়নের  কৃষক হাফেজ আলম। চলতি বছর ১২ বিঘা জমির মাঝে করেছেন আমন ধানের ফসল। সেই ফসলের সোনালী ধান এখন বড় হয়ে বাতাসে দুলছে । আর সেই ধানকে ঘরে তুলেই নবান্ন উৎসবের আনন্দে মাতবেন হাফিজ আলমসহ তার পরিবার ।  

হাফেজ আলম  জানান, উৎপাদিত ফসলের প্রতি বিঘাতে ১৫ থেকে ১৬ মন ধান হবে। এই বছর ধানের ফলন ভালো হওয়ায় হাওরের প্রত্যেকটি কৃষক খুশি। এবং নবায়নের ধান ঘরে তুলে কৃষকরা আনন্দে মেতে উঠবে।

শুধু হাফেজ আলম নয় চলতি বছর সুনামগঞ্জের ৬০ টি হাওরে ৪ লাখ কৃষক ৮৩ হাজার ৩শ ৬৯ হেক্টর রোপা আমনের আবাদ করেছেন। যা থেকে চাল হবে ২ লাখ ১১ হাজার মেট্রিক টন যার বাজার মূল্য  ৯২০ কোটি টাকা।

তবে কৃষিতে আধুনিকতার ছোয়া লাগায় সুনামগঞ্জের প্রতিটি হাওরে কৃষি জমি করতে যেমন সহজ ও কম সময় লাগছে, তেমনি আধুনিক হারভেস্টর মেশিনের যন্ত্রতে দ্রুত সময়ে সেই ধান ঘরে তুলতে পারছেন কৃষকরা। এমনকি সময়ের পরিক্রমায় ধানের ভালো দাম পাওয়ায় হাওর এলাকায় বছরে  বছরে বাড়ছে ধান উৎপাদন।

এদিকে সুনামগঞ্জ কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, সুনামগঞ্জে ২০২১ সালে আমন ধানের আবাদ হয়েছে ৮১ হাজার ১০০ হেক্টর। যা থেকে চাল উৎপাদন হয়েছে ২ লাখ মেট্রিক টন। যার বাজার মূল্য ৮৭৫ কোটি।

একই ভাবে ২০২২ সালে এই জেলায় ৮২ হাজার ২১৫ হেক্টর জমিতে আমনের আবাদ হয়। সেখান থেকে ধান উৎপাদন হয় ৩ লাখ ৮ হাজার মেট্রিক টন। যার বাজার মূল্য ৯০০ কোটি টাকা। অথার্ৎ গত দুই বছরসহ চলতি বছর পযর্ন্ত হাওরে ৪ শতাংশ ধান উৎপাদন বেড়েছে।

তবে হাওর পাড়ের কৃষকরা বলছেন, বিগত বছরের তুলনায় এবার ফলন ভালো হয়েছে। কোনো ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছাড়াই মাঠের ধান গোলায় তুলতে পারছেন। সেই সাথে নবান্ন উৎসবের সঙ্গে মিশে আছে বাঙালির ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি। নতুন ধান কাটা আর সেই ধানের প্রথম অন্ন খাওয়াকে কেন্দ্র করে পালিত হয় এ উৎসব।

তবে সুনামগঞ্জের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম  বলেন, হাওরের এই বছর আমনের ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। এতে হাওরের কৃষকরা অনেক খুশি তারা আনন্দের সাথে হাওরের ধান ঘরে তুলছেন।