দিরাই প্রতিনিধি:
দিরাই উপজেলা আওয়ামীলীগ আয়োজিত আওয়ামীলীগ ও অঙ্গসংগঠনের যৌথ সভায় বক্তারা বলেছেন,প্রখ্যাত পার্লামেন্টিয়ান দিরাই-শাল্লা আসনের সাতবারের এমপি ও সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের এলাকায় নৌকা বিরোধী ও বহিষ্কৃত নেতার আহ্বানে পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান এমপি আসছেন। কিন্তু জানেন না উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীরা। বহিস্কৃতরা পাশ কাটিয়ে, দল বিরোধী, বহিস্কৃত, অব্যাহতিপ্রাপ্ত, কিছু দলছুট ও অনুপ্রবেশকারী এবং জামাত শিবিরের এজেন্ডা বাস্তবায়নে ৩ অক্টোবর দিরাই সফরে আসছেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এমন ঘোষনা দিয়ে প্রচারনা চালানো হচ্ছে নৌকা বিরোধী বহিস্কৃতরা। এমন প্রচারনা খবর শুনে উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ও নিন্দার ঝড় বইছে।
বক্তারা বলেন, মন্ত্রী উন্নয়নের পরিকল্পনা বাদ দিয়ে দলের ক্ষতি সাধনের পরিকল্পনা করছেন। সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলা আওয়ামীলীগ
কর্যালয়ে আওয়ামীলীগ ও অঙ্গসংগঠনের যৌথসভায় বক্তব্যকালে বক্তরা এসব কথা বলেন।
উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনয়ির সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট. সোহেল আহমদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ রায়ের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি ও জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য আলতাব উদ্দিন, সহ সভাপতি সিরাজ-উদ দৌলা তালুকদার, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান তালুকদার, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট,অভিরাম তালুকদার, যুগ্ম সম্পাদক লুৎফুর রহমান এওর মিয়া, জগদীশ সামন্ত, জেলা আওয়ামীলীগের পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন রশিদ লাভলু, রফিনগর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান রেজুয়ান হোসেন খান, ইফতেকার হুসেন মঞ্জু, আবদুল মতিন, মিলন মিয়া, সিরাজুল ইসলাম,মকসদ আলম,সেবুল রেজা চৌধুরী, ইকবাল সরদার, পারভেজ রহমান সহ উপজেলা,ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ,যুবলীগ,ছাত্রলীগ এবং অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
উক্ত সভায় ভার্চুয়াল বক্তব্যে অংশ গ্রহনের মাধ্যমে উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ছাদিকুর রহমান ছাদ মিয়া বলেন,পরিকল্পনা মন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে আমার নাম ব্যবহার করে যারা মাইকিং করছে তাদের বিরুদ্ধে আমি প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাই। আমি কখনো দলের বিরুদ্ধে যাইনি যাবোও না। সভা শেষে বেলা ২টার দিকে দলীয় কার্যালয়ে স্থানীয় সংবাদ সম্মেলন করে উপজেলা আওয়ামীলীগ। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি অ্যডভোকেট. সোহেল আহমদ।
লিখিত বক্তব্যে অ্যাডভোকেট. সোহেল আহমদ বরেন, আওয়ামীলীগ থেকে বহিস্কৃত মোশাররফ মিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি প্রয়াত আছাব উদ্দিন সরদারের শোক সভা পালনের নামে ৩ অক্টোবর পরিকল্পনা মন্ত্রী এমএ মান্নান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন মর্মে প্রচারনা চালাচ্ছেন। উপজেলা আওয়ামীলীগকে পাশ কাটিয়ে বহিস্কৃত নেতার আহবানে আরেক সংসদীয় এলাকায় ষড়যন্ত্রের নকশা শোক সভায় আসা দলীয় শৃংখলা ও সংসদীয় শিষ্টাচারের পরিপন্থী। বিএনপি নেতাদের আহবানে আওয়ামীলীগের নাম ভাংগিয়ে শোক সভায় আসা এবং বীরদর্পে সরকারি
প্রশাসনযন্ত্র ব্যবহার করে শোকসভার নামে শক্তি মহড়া প্রদর্শন করে আওয়ামীলীগকে দুর্বল করার একটি অপকৌশল বলে মনে করে উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ , ইতিপুর্বে পরিকল্পনা মন্ত্রী স্থানীয় সাংসদ ড, জয়াসেনগুপ্তা ও জেলা, উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের উপেক্ষা করে বিএনপির এজেন্ডবাস্তবায়নকারী হিসেবে চিহিৃত মিজানুর রহমানের আহবানে জগদল ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালটি কার্যক্রম পুন:উদ্বোধন করে গেছেন পরিকল্পনা মন্ত্রী। সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কর্তৃক বহিস্কৃত ও তৎকালীন সিলেট
বিভাগের দাযিত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন শফিক দিরাইয়ে প্রকাশ্য জনসভায় দলীয় শৃংখলা ভঙ্গগের দায়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক মোশাররফ মিয়াকে দলীয় কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি ঘোষনা করেন, যা পরিকল্পনামন্ত্রীসহ জেলার নেতৃবৃন্দ অবগত আছেন । উনার আগমনে দিরাই আওয়ামীলীগে দ্বন্দ্ব বিরোধ সৃষ্টি করবে। তিনি দলছুট নেতাদের পরামর্শে কাজ করছেন, যাহা বিএনপির গভীর ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নে কাজ করা হচ্ছে বলে জেলা ও স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ। মন্ত্রীর আগমনকে ঘীরে জেলা ও উপজেলা আওয়ামীলীগে ক্ষোভ ও নিন্দার ঝড় বইছে। মন্ত্রীর দলীয় শৃংখলা ভংগের বিষয়টি কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে অবহিত করা হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। আওয়ামীলীগকে পাশ কাটিয়ে মন্ত্রীর সফর বিষয়ে করনীয় জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতাদের পরামর্শে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি প্রয়াত আছাব উদ্দিন সরদার, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক প্রয়াত হাবিবুবুর রহমান তালুকদার, প্রচার সম্পাদক বিকাশ রায়সহ প্রয়াত নেতাদের স্বরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয় এবং তাদের স্বরণে আওয়ামীলীগ ব্যাপকভাবে শোকসভার আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এছাড়া আগামীকাল মঙ্গলবার দলীয় কার্যালয়ে আওয়ামীলীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্ম দিন পালন উপলক্ষ্যে কেক কাটা ও আনন্দ র‍্যালী করার ঘোষনা দেয়া হয়।